ঈদগাঁও’তে মা‌সোহারা দি‌য়েই চল‌ছে ৮ টি ইট ভাটা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫
 ভৌগ‌লিক ভা‌বে বন বিভা‌গের বিশাল বনভূ‌মি বে‌ষ্টিত ঈদগাঁও উপ‌জেলা। র‌য়ে‌ছে চোখ জোড়া‌নো ফসলি জ‌মি। যা আগামী ক‌য়েক বছ‌রের ম‌ধ্যে বি‌লিন হ‌য়ে যা‌বে। বছর জো‌ড়ে যে প‌রিমান সাম‌ি‌জিক ও সংর‌ক্ষিত বনায়‌নের গাছ কাটা হ‌চ্ছে, চোরাই প‌থে পাচার হ‌চ্ছে খুব অল্পক‌য়েক বছ‌রের ম‌ধ্যেই ঈদগাঁও এর বন বিভা‌গের সংর‌ক্ষিত বনভূ‌মি বি‌লিন হ‌য়ে যা‌বে। চোরাই গা‌ছের এক‌টি অংশ কম মূ‌ল্যে লাকড়ি হি‌সে‌বে যায় ইট ভাটায়। উপ‌জেলা জু‌ড়ে বিস্তৃত অথচ দে‌শে যে ক‌’টি ইট ভাটা সরকা‌রি বি‌ভিন্ন দপ্ত‌রের অনু‌মোদন র‌য়ে‌ছে সেগু‌লো‌তেও ব‌নের কাঠ জ্বালা‌নো অ‌বৈধ। আর ইট ভাটার মূল কাচামাল হ‌লো এটেল মা‌টি। যার যোগান ফসলি জ‌মির টপ স‌য়েল। বছ‌রের এক‌টি নি‌র্দিষ্ট সম‌য়ে স্কে‌বেটা‌রের মাধ‌্যমে ফসলি জ‌মির টপ স‌য়েল লুট ক‌রে ইটভাটা মা‌লিক‌দের ছত্রছায়ায় থাকায় সি‌ন্ডি‌কেট। এক‌দি‌কে টপ স‌য়েল লু‌টের কার‌নে ফস‌লি জ‌মির দ্বীর্ঘস্থায়ী উর্বরতা নষ্ট হ‌চ্ছে অপর‌দি‌কে ব‌নের গাছ কাটার ফ‌লে উজার হ‌চ্ছে বন, বি‌লিন হ‌চ্ছে বিস্তৃত বনভূমি। ঈদগাঁও উপ‌জেলান যে ক’‌টি ইটভাটা রয়েছে অধিকাংশই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, সংরক্ষিত বনসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে ও ফসলি জমিতে স্থাপন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে ইটভাটায় পোড়ানো হ‌চ্ছে বনের কাঠ এবং কাচামাল হি‌সে‌বে ব‌্যবহার হ‌চ্ছে ফস‌লি জ‌মির টপ স‌য়েল। কয়লার দাম গত বছরের চেয়ে তুলনামূলক বেশি থাকায় কয়লার পরিবর্তে ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র।অনুসন্ধানে জানা যায়, টপ স‌য়েল লুট ও সামা‌জিক বনায়‌নের গাছ কে‌টে পাচা‌রের শ‌ক্তিশা‌লি সি‌ন্ডি‌কেট নিয়ন্ত্রন ক‌রে ইটভাটার মা‌লি‌কেরা। বন‌বিধ্বংসী, টপ স‌য়েল লুটকা‌রি, উপ‌জেলা প্রশাসন, পু‌লিশ প্রশাসন, প‌রি‌বেশ অ‌ধিদপ্তর ও ফয়ার সা‌র্ভিস অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ ক‌রে ঈদগাঁও উপ‌জেলার ইটভাটা মা‌লিক‌দের সংগঠ‌নের নেতা রেজাউল ক‌রিম সিকদার। ইটভাটার মা‌লিকরা সকল সি‌ন্ডি‌কেট ও সরকা‌রি দপ্তরগু‌লো ম‌্যা‌নেজ করার জ‌ন্যে মোটা অং‌কের টাকা সংগঠন নেতা রেজাউল ক‌রিম সিকদা‌রের হা‌তে জমা দেয়।রেজাউল সিকদার নি‌জের ম‌তো ক‌রে ঈদগাঁও উপ‌জেলা প্রশাসন, ঈদগাঁও থানা, কক্সবাজার প‌রি‌বেশ অধিদপ্তর, কক্সবাজার ফায়ার সা‌র্ভিস অ‌ফিসে নিয়‌মিত মা‌সিক মা‌সোহারা দেয়। ইটভাটার এক কর্মচা‌রি প্রতি‌বেদক‌কে জানান যত‌দিন ইটভাটা চালু থা‌কে ত‌তো‌ধিন প্রতি ইটভাটা থে‌কে প্রতি মা‌সেই ১৫ হাজার টাকা মা‌সোহারা পাঠা‌নো হয়, এবং উপ‌জেলা প্রশাসন‌কে ম‌্যা‌নেজ কর‌তে  দি‌তে হ‌য়ে‌ছে ৩ লাখ টাকা। নাম প্রকা‌শে অ‌নিচ্ছুক এক ইটভাটা মা‌লিক প্রতি‌বেদ‌কে জানান ইউএনও, প‌রি‌বেশ, থানাসহ যাব‌তীয় সরকা‌রি অ‌ফিস ও সি‌ন্ডি‌কেট ম‌্যা‌নেজ করার জ‌ন্যে প্রতিবছরই মোটাদা‌গে রেজাউল ক‌রিম সিকদার‌কে টাকা দি‌য়ে দেওয়া হয়। কেউ অভিযা‌নে আস‌লে সবার পক্ষ থে‌কে তি‌নিই সব ম‌্যা‌নেজ ক‌রেন, দেখভাল ক‌রেন। এ বিষ‌য়ে ঈদগাঁ বাস স্টেশ‌নের গরু বাজার এলাকার আর‌কে‌সি ব্রিকস্ এর মা‌লিক ও সংগঠন নেতা রেজাউল ক‌রিম সিকদার প্রতি‌বেদক‌কে ব‌লেন ঈদগাঁও‌তে বর্তমা‌নে ৮‌টি ইটভাটা চালু আছে। সবগু‌লোরই শতভাগ কাগজপত্র আছে এবং কোন ইটভাটায় লাক‌ড়ি পোড়া‌নো হয়না। প‌রি‌বেশ অধদপ্তর কক্সবাজা‌রের উপ প‌রিচালক প্রতি‌বেদক‌কে মু‌টো‌ফো‌নে ব‌লেন, তি‌নি ঢাকায় আছে। ৩৩৩ নাং এ অভি‌যোগ দি‌লে পরবর্তী‌তে ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।