এস এম নিয়াজ মোর্শেদঃ বিস্ময়কর এই যন্ত্রটির নাম কম্বাইন হার্ভেস্টার এতোদিন উন্নত বিশ্বে ব্যবহার হলেও এখন নাজিরপুরের ধান ক্ষেতেই এর দেখা মেলে। মেশিনের সাহায্যেই ক্ষেত থেকে ধান কেটে মাড়াই করা হচ্ছে একই সঙ্গে। মাত্র একঘন্টায় কয়েক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ করা সম্ভব এই মেশিনে। পিরোজপুরের নাজিরপুরে এই প্রথম কৃষক বান্ধব হার্ভেস্টার মেশিন। ক্ষেত থেকে ধান গাছ নয়, সরাসরি সংগ্রহ করা হচ্ছে ধান। সঙ্গে সঙ্গে আলাদা করে ফেলা হচ্ছে খড়।
সেই সাথে কৃষক রাসেল এর ভাগ্য উন্নয়নে ব্যাপক ভ‚মিকা রাখছে এই মেশিন। একসময় শুধু মাত্র উন্নত বিশ্বে ব্যবহার হলেও, এখন বাংলাদেশের মতো উন্নয়ণশীল দেশের ক্ষেতে-খামারে দেখা মিলছে এই যন্ত্রের। আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী বোরো মৌসুমে মেশিন দিয়ে কৃষকের ধান কাটা ও মাড়াই করা হয়। এই মেশিন প্রতি ঘন্টায় ১ একর জমির ধান কেটে মাড়াই করতে পারে। প্রতিনিয়তই ৬ থেকে ৭ ঘন্টা চলে এই মেশিন। চলতি মৌসুমে নাজিরপুর উপজেলায় তরুন কৃষি উদ্দ্যোক্তা রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্ত জামিল আহম্মেদ রাসেল নামে কৃষককে ৫০% ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়।
২০১৭ সালের ১ নভেম্বর তরুন কৃষি উদ্দ্যোক্তা হিসাবে জামিল আহম্মেদ রাসেলকে রাষ্ট্রপতি পদক প্রদান করা হয়। এ ব্যাপারে কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন করোনা মহামারির এই সময়ে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। শ্রমিক সংকটে কৃষক ধান কাটতে হিমসিমে পড়েছে। তাই সরকার কৃষকের মাঝে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করায় অতি তারাতারি ধান ঘরে তুলতে পারছি। এ কৃষকের ক্ষেতে ধান কাটা ও মারাই করা দেখতে
এসে শত শত কৃষক ভীর জমায়।
তাদের মধ্য থেকে অসীম করাতী নামের এক কৃষক বলেন আমি ৩৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছি আমিও এ মেশিন দিয়ে অতি তারাতারি ধান কেটে ও মারাই করে ঘরে তোলব। এসময় ঐ কৃষক আরো বলেন, সরকারী ভাবে ৫০% ভর্তুকি মূলে আমাকে এ মেশিনটি দেওয়া হয়। যাহার মূল্যে ২৯ লাখ টাকা। এ মেশিন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ধান কাটা যাবে এক একর। এ ছাড়াও ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়া, ও প্যাকেটজাত করা যাবে কম্বাইন হারভেস্টার (ধান কাটার মেশিন) মেশিন দিয়ে।
এক একরের জন্য ডিজেল খরচ হবে মাত্র ৮ লিটার। তাই অতি অল্প সময় ও কম খরচে কৃষক তার ধান ঘরে তুলতে পারবে। প্রতিদিন আমি এই মেশিনের সাহায্যে সাড়ে ৫ একর জমির ধান কাটা ও মাড়াই করে থাকি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দ্বিগবিজয় হাজরা জানান, মেশিনটি নাজিরপুরেআসায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। কারণ তারা এই মেশিনের সহযোগিতায় স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচে তাদের ধান ঘরে তুলতে পারবে।