মাসুদ রানাঃ শুরুতে ধানের ভালো ফলনে আশায় বুক বেঁধেছিলেন রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের খুলিয়াতারী গ্রামের বর্গাচাষি রবিউল ইসলামের। ভেবেছিলেন এবারে ধান কেটে দেনা পরিশোধের পর খরচ বাদ দিয়ে যা থাকবে বছরজুড়ে পেটের ভাত জুটবে। কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি।
ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ৫৫ শতক জমিতে আবাদ করা ব্রি-২৮ ধান থেকে তিনি ছয় মণ ধানও পাবেন না। এ অবস্থা শুধু রবিউলের নন, উপজেলার শত শত কৃষকের। চলতি বোরো মৌসুমে রাজারহাট উপজেলায় এক হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে ব্রি-২৮ জাতের এবং সর্বমোট ১২ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাজারহাট ইউনিয়নের ফুলবাড়ি উপনচৌকী, হরিশ্বর তালুক, চাকিরপশার ইউনিয়নের খুলিয়াতারী, পীরমামুদ, চাকিরপশার তালুক, উমর মজিদ ইউনিয়নের ঘুমারু ভিমশীতলা, ধনঞ্জয়, উমর পান্থাবাড়ি, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের মনঃস্বর, পাড়ামৌলাসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে জানা গেছে, ব্রি-২৮ ও ৮৬ নম্বর আগাম জাতের ধানক্ষেতগুলোয় ব্যাপক হারে ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
দূর থেকে দেখে ধান পেকেছে মনে হলেও কাছে গিয়ে দেখা যায়, অপরিপকস্ফ ধানের শিষগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। যার ভেতর কোনো চাল নেই। প্রতিদিন একের পর এক ধানক্ষেত সংক্রমিত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। গত ১০-১৫ দিনের মধ্যে উপজেলার ছিনাই, ঘড়িয়ালডাঙ্গা, উমর মজিদ, নাজিমখাঁ, চাকিরপশার ও রাজারহাট ইউনিয়নসহ উপজেলার সব এলাকাতেই ব্রি-২৮ ও ৮৬ জাতের ধানক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
দ্রুত প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলে চাষিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা সংশ্নিষ্টদের।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শম্পা আক্তার জানান, দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ব্রি-২৮ জাতের ধানক্ষেতে ব্লাস্টের সংক্রমণ এবার বেশি। এ বিষয়ে কৃষকদের আতঙ্কিত না হয়ে স্প্রে এবং ওষুধ প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্রি-২৮ ছাড়া সার্বিকভাবে বোরোর ফলন ভালো হয়েছে বলেও তিনি জানান।