গাজী নজরুল ইসলামঃ খুলনার কয়রা উপজেলার ২নং বাগালী ইউনিয়নের, বগা গ্রামের মোছাঃ অফিরোন খাতুন, স্বামী এলাই শিকারীর বসত ঘরের পিছনে অবস্থিত পল, গোলপাতা ও বিচুলি গাদাই, কে বা কাহরা অগ্নিসংযোগ করিয়া ক্ষতিসাধন করিয়াছে।ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায় বসতভিটা বন্টন কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ভিতরে বেশ কিছুদিন গোলযোগ চলছে তারই সূত্র ধরে অগ্নিসংযোগ হয়েছে বলে এলাকাবাসীর ধারনা করেছে ।
এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ মোছাঃ অফিরোন খাতুন সাংবাদিকদের জানায়, আমরা চার বোন, আমাদের কোন ভাই নেই দিনমজুরি খাটিয়া জীবিকা নির্বাহ করি, আমাদের কোন জায়গা জমি না থাকায় আমাদের পিতার মৃত্যুর পর, পিতার বসতভিটায় আমরা চার বোন, স-পরিবারে পৃথক পৃথক ভাবে বসত ঘর তৈরি করে, বসবাস করিয়া আসিতেছি। তবে আমার ভগ্নিপতি আলী সরদার, পিতা ইলাহি সরদার, এন্তাজ আলী খাঁ, পিতা বাগরাজ খাঁ, সিদ্দিক সরদার, পিতা আহম্মাদ সরদার ও আমার বোনের পুত্র রবিউল সরদার পিতা আলী সরদার, ইব্রাহিম খাঁ, পিতা আলী খাঁ এবং আমার সহোদর তিনবোন সাফিয়া খাতুন, স্বামী এন্তাজ আলী খাঁ, ফজিলা খাতুন, স্বামী আলী সরদার, ও রফিলা খাতুন, স্বামী সিদ্দিক সরদার, উপজেলা কয়রা, জেলা খুলনা, তারা সকলে একত্রিত হয়ে আমাকে উচ্ছেদ করার জন্য বিভিন্ন সময় হুমকি প্রদর্শন করে। গত একসপ্তাহ আগে পাশের পুকুর ও খানাখন্দকে মাটি ভরাট করার জন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সালিশের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে ১০ (দশ) হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করিয়াছে।
বর্তমান আমার বসতঘরটি ক্ষতিগ্রসস্থ হওয়ায় ঘর মেরামত করার জন্য মিস্ত্রী দ্বারা কাজ পরিচালনা করিতেছি। এমতাবস্তায় উক্ত ব্যক্তিবর্গ আমার ঘর মেরামত কাজে বাধা সৃষ্টি ও ভয়ভীতি, হুমকি ধামকি দিয়া আসিতেছে। অদ্য ১লা মে ২০২১ ইং শনিবার সকাল থেকে অসমাপ্ত ঘরের সিমেন্ট সিটের ঢেউটিন দিয়ে ছাওনির কাজ করছিল, তাহারি জের ধরে প্রায় দুপুর ১২ টার দিকে, আমার ঘরের পিছনে পল, গোলপাতা ও বিচুলিগাদায় অগ্নি সংযোগ করিয়াছে।আমাদের আত্মচিৎকারে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ আগুন নিভাতে সক্ষম হলেও তার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়াছে। স্থানীয় দোর্ষীরা বলেন আগুন জ্বলতে দেখে ছুটে এসে আগুন নেভানোর কাজে সহযোগিতা করি তবে, কে বা কারা আগুন লাগালো সেটা বলতে পারবো না।
এ বিষয় আলী সরদারের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা সব ভাইরাভাই শশুরের জমিতে থাকি তবে আলামিন অর্থাৎ এলাই শিকারী যে জমিতে বসবাস করে সেটা ছলিট জমি আর আমাদের ভাগের জমিগুলো খানাখন্দক পুকুর ডোবা তাই আমি বলতে চাই ওই পুকুরে মাটি ভরাট করে দিলে আমাদের কারোর কোন অভিযোগ নেই,যে যেখানে আছে সে সেখানেই থাকবে সে কথা না শুনে তারা ঘর দরজা ঠিক করেছে, তবে পুকুর ভরাট করার জন্য সে ১০ (দশ) হাজার টাকা দিয়েছে এবং বাকি টাকা পরে দিবে বলে স্বীকার করেছে, তবে আমার ছোট শালী এ ঘটনা কিছু জানে না, সে কারনে সে বিভিন্ন রকম গালিগালাজ করতে লাগে আমি এসে বললাম চিল্লাপাল্লা করিস না ও ঐই জায়গায় থাকুক আমরা মধ্যখানে থাকি।
আমরা যদি ছলিট জায়গা পাই তাহলে তো কোন কথাই থাকে না তবে তুই চিল্লাপাল্লা করিস না এই কথা বলতেছি এর ভিতর দেখি আগুন জ্বলে উঠেছে তবে আগুন কে দিল ক্যাডা দিল এর কোন ই নেই।
পরবর্তীতে আমরা আগুন নিভানোর কাজে সহযোগিতা করি।স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মোঃ বিল্লাল হোসেন গাজী, পিতা ফজলুল হক গাজী বলেন আমি আমার গৃহপালিত পশুর (গরু) গোসল করানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলাম এমন সময় লোকমুখে জানতে পারলাম মালি বাড়িতে কোথাও যেন আগুন লেগেছে এসে দেখি আলামিনের ঘরের পিছনে পল, বিচুলিগাদা ও গোল পাতায় আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে এবং পাশে ব্যক্তিবর্গরা অনেক বকাবকি করতে থাকে এবং বলে তোরা কেন এই কাজ করতে গেলি। তবে প্রায় ৫/৬ দিন আগে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ দুই পক্ষকে ডেকে এক জায়গায় বসে আলাপ-আলোচনা করি। প্রতিপক্ষের দাবি পুকুর-ডোবা মাটি দ্বারা পূরণ না করা পর্যন্ত, ওদের ঘরের কাজ করতে দিবেনা।
যার জন্য আমি নিজে হাতে আলামিনের আব্বা অর্থাৎ এলাই শিকারীর কাছ থেকে পুকুরে মাটি ভরাট করা বাবদ নগদ ১০ (দশ) হাজার টাকা নিয়ে প্রতিপক্ষ আলী জামাইয়ের হাতে দেয়। বাকি টাকা ও পরে দিবে বলে স্বীকার করে। প্রতিপক্ষ দাবি করে ঘরের কাজ শেষ হলে তারা বাকি টাকা হয়তো দিবে না। এই ঘটনা কেন্দ্রকরে আজ অগ্নিসংযোগ হয়েছে। তবে অগ্নিসংযোগ বিষয় একে অন্যকে দোষারোপ করছে এখন কে বা কিভাবে অগ্নিসংযোগ করলো সেটা বলতে পারবো না। এই মর্মে মোছঃ অফিরন খাতুন বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামী করে, কয়রা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।