রহমতউল্লাহঃ নওগাঁয় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রিতা বেগম ৩৫, নামে এক গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ৩০ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে যানা যায়।নিহত রিতা বেগম মোসলেম উদ্দিনের স্ত্রী নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের চক-চাপাই গ্রামের বাসিন্দা । এ ঘটনায় নিহতের মা রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আগুন দেয়ার ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, বাড়ির দুই শতক জমি নিয়ে নিহত নারীর স্বামী মোসলেম উদ্দিনের ভাই ও ভাতিজাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২৪ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে প্রতিপক্ষরা রিতাকে এ নিয়ে হুমকি দিয়ে যায়। তখন তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না বলে যানা য়ায়। বাড়িতে ফিরলে তিনি স্ত্রীর কাছে বিষয়টি শোনেন। পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল মোসলেম উদ্দিনের ভাতিজা আলামিন প্রামানিক (২৩), আলামিনের মা সাহিদা বেগম (৪৫), চাচাতো ভাই সানোয়ার প্রামানিক (৩২) ও জলিল প্রামানিকের (৩৫) বিরুদ্ধে রিতা বেগম থানায় অভিযোগ করেন।
ওইদিনই দিবাগত রাত ১টার দিকে রিতা ঘরের বাইরে থাকা বাথরুম থেকে ফেরার পথে ৪-৫ জন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় তার চিৎকারে মেয়ে আরিফা ইয়াসমিন ও স্বামীসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। জীবন বাঁচাতে রিতা পুকুরে লাফিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই উন্নত চিৎকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পালিয়ে আছে।নিহতের স্বামী মোসলেম উদ্দিন বলেন, বাড়ির দুই শতক জমি নিয়ে ভাই-ভাতিজাদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। গত কয়েকদিন আগেই ওই জমি ছেড়ে দিতে তারা আমার স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়। কিন্তু ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমার স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানান তিনি।
নিহতের মেয়ে আরিফা ইয়াসমিন বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর মা একটু একটু কথা বলতে পারতেন। তিনি মারা যাবার আগে ওই চারজনের নাম বলে গেছেন। তারাই আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে তারা হত্যা করেন নওগাঁর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, নিহত রিতা বেগম থানায় অভিযোগ করার পরই রাতে গায়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মরদেহ নিয়ে আসা হলে দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন বগুড়ায় করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর শুক্রবার বিকেলে ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তদের কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।