আমিরুল হকঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রেমিকার সাথে দৈহিক মিলনের ভিডিও ধারণ মামলায় ধর্ষকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২ মে) ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে ওই তিন বন্ধুকে পৃথক পৃথক স্থান থেকে গ্রেতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে।
এরা হলো উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে মোঃ মুন্না (২৫), একই গ্রামের পাঠানপাড়ার শওকত আলীর ছেলে মোঃ আলাল (২৫) ও আমজাদের মোড়ের শহিদুল ইসলামের ছেলে তৌফিক ইসলাম তুহিন (২০)। এরা তিনজনেই পরস্পরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
মামলার বিবরনে জানা যায়, সৈয়দপুরের বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার মাদরাসার ছাত্রী মনিরা আক্তারের (ছদ্মনাম) সাথে ২০১৮ সালে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই পাড়ার মুন্নার। ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পাঠানপাড়ার আলালের বাড়িতে দেখা করে মুন্না ও মনিরা । এ সময়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মনিরার সাথে দৈহিক মিলন করে মুন্না। সে এসময় কৌশলে ওই দৈহিক মিলনের ঘটনাটি মোবাইলে
ধারন করে।
পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারী মনিরা আক্তারের সাথে একই গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে আশিকুর রহমানের সাথে বিয়ে সুসম্পন্ন হয়। সুখের সংসারে বিপত্তি দেখা দেয় চলতি বছরের ১০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে। মনিরার সাথে মুন্নার অপর বন্ধু তুহিন দেখা করে তাকে জানায়, মুন্নার সাথে তার (মনিরার) দৈহিক মিলনের একটি ভিডিও তার কাছে রয়েছে।
ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ১৪ এপ্রিল মনিরা সৈয়দপুর প্লাজার ‘বার্গার কিং’ নামে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে তুহিনের সাথে দেখা করে।
তুহিন একটি ফেসবুক আইডি থেকে ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও তাকে দেখায়। পরে সেটি ডিলিট করার জন্য অনুরোধ জানালে তুহিন ২ লাখ টাকা অথবা দৈহিক মেলামেশা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব দেয়। এতে সে অসম্মতি জানিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে যায় ।
শনিবার (১ মে) সকালে তুহিন মোবাইল ফোনে আবারো টাকা অথবা দৈহিক মেলামেশার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে ভিডিওটি ইন্টারনেট ও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে মনিরা আক্তার নিজে বাদী হয়ে তিনজনকে আসামী করে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইদুর রহমান জানান, মামলার পর ওইদিন সারা রাত অভিযান চালিয়ে শহরের পাঁচমাথা মোড় থেকে তৌফিক ইসলাম তুহিন, আমজাদের মোড় থেকে মোঃ আলাল এবং নিজ বাড়ি থেকে মোঃ মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, মামলাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ভিকটিমকে শারিরীক পরীক্ষার জন্য নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। অপরদিকে গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।