জামাল কাড়ালঃ বরিশাল নগরীর আলেকান্দা ১৪নং ওয়ার্ডের রিফিউজি কলোনী এলাকার বিসিসি পরিচ্ছন্ন কর্মী মোঃ আমির গাজীর হত্যাকারীদে গ্রেফতার করার মাধ্যমে দ্রুত বিচার ও ফাঁসির দাবী জানিয়ে পরিবার সহ এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সোমবার (১২ই) এপ্রিল সকাল ১১ টায় নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডে।
এসময় প্রশাসনের কাছে ছেলে হত্যার বিচারের প্রার্থনা করে বক্তব্য রাখেন আমিরের বাবা বৃদ্ধ আলতাফ গাজী,মা খাদিজা বেগম,চাচা জামাল গাজী,আমিরের বৃদ্ধা নানি জোহরা বেগম,চাচি নাজমা বেগম ও এলাকাবাসী আঃ ছালাম হাওলাদার,জাকির হাওলাদার প্রমুখ।উল্লেখ্য, নিহত ওই যুবকের নাম মো: আমির গাজী (২৪)। সে নগরীর আলেকান্দা রিফিউজি কলোনী এলাকার আলতাফ গাজীর ছেলে ও বরিশাল সিটি কপোরেশনের একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ছিলেন।
গত ২৬ জানুয়ারি একটি মটর সাইকেলকে কেন্দ্র করে নগরীর চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে।পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ মার্চ রাতে তার মৃত্যু হয়।নিহত ওই যুবকের বাবা আলতাফ গাজী বলেন, আমার একমাত্র ছেলে বরিশাল সিটি কপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মীরা বাড়ীর পুল মসজিদের সামনে কবুতর ও পাখির দোকান ছিল।
তার ব্যবসায়িক কাজে আসা যাওয়ার জন্য একটি ইয়ামাহা মোটর সাইকেল ব্যবহার করতেন।চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখে আমার ছেলে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি মীরাবাড়ীর পুল পলাশ গলির মুখে রেখে নিজের ব্যবসায়িক দোকানে যায়। পরে বিকেল ৫টার দিকে বের হয়ে মটর সাইকেলটি দেখতে না পেয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে জিজ্ঞেস করে।এসময় ওই এলাকার অলি (১৭) জানায় তার মটরসাইকেলটি মো: এমরান, হৃদয় এবং রাজা চুরি করে নিয়ে যায়।
পরে আমার ছেলে শহরের বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি করে জানতে পারে মটরসাইকেলটি নগরীর ২৩নং ওয়ার্ডের সিএন্ডবি রোডের পশ্চিম পাশের ইসলামপাড়া মো: আসাদুজ্জামান বাদশা’র ওয়ার্কশপে রাখা আছে।খবর পেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা পোৗনে ৬টার দিকে আমার ছেলে মো: আমির গাজী ঘটনাস্থলে গেলে মটরসাইকেল দেখতে পেয়ে মটর সাইকেল বের করে।
কিন্তু বের হওয়ার সময় মো: এমরান, হৃদয় এবং রাজা মটর সাইকেলের ঘাড়লক মেরামত করে দেওয়ার কথা বলে সময় ক্ষেপন করতে শুরু করে।এক পর্যায়ে উল্লেখিতরা ও মো: মেহেদী ও মো: রাফি সহ ১৪/১৫জন মিলে আমার ছেলেকে জিআই পাইপ, কাঠের চলা, এবং লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে।পরে তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে তার শারীরীক অবস্থার অবনতি হয় পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গত ২৪ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এঘটনায় ৭জনকে আসামী করে বরিশাল কোতয়ালী থানায় নিহতের মা খাজিদা বেগম একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ দুইজনকে আটক করলেও তারা বর্তমানে জামিনে রয়েছে।পরবর্তীতে আমীর গাজীর মৃত্যুর পর গত ৪ এপ্রিল তার মা খাদিজা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিেেস্ট্রট আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৯ জনকে আসামী করা হয়েছে।
এরা হলে মো: এমরান (২২), হৃদয় (২৪), মো: রাজা (২২), মো: আবিদ (১৯), মো: মেহেদী (১৯), মো: রাফি (১৯), মো: আসাদুজ্জামান বাদশা (২৪), বনি আমিন (২৩), মো: হানিফ আকন (২৩)।এর মধ্যে মটর সাইকেল উদ্ধারের সময় আমার ছেলের সাথে থাকা তার দুই বন্ধু বনি আমিন (২৩), মো: হানিফ আকন (২৩) কেও আসামী করা হয়েছে। তারাই মুলত্র আমার ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনায় হত্যাকারিদের সহযোগীতা করে।
নিহতের বাবা আফতাব গাজী অভিযোগ করে বলেন, যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তারা ওই এলাকার কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসী নামে পরিচিত। একটি মটর সাইকেলের জন্য তারা আমার ছেলেকে র্নিমম ভাবে হত্যা করেছে।আমি এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির দাবি জানান।