তারিকুর রহমানঃ বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে এই রোগে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা। কিন্তু তাতে কারো কিছু যায় আসেনা। করোনার ভয়ে মার্কেটে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে নারাজ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলাবাসী। শুধুমাত্র জীবননগর নই, জেলার প্রতিটি উপজেলার মার্কেটসহ পুরো দেশের একই অবস্থা। ঈদের এখনো অনেকদিন বাকি থাকলেও গতবারের মতো ঝুঁকি নিতে রাজি নই তারা।
তবে মার্কেটে আসা মানুষের বেশীরভাগই মহিলা। যাদের পদচারণায় মার্কেটেগুলোতে প্রবেশের মতো অবস্থা থাকছেনা। আর বিকাল হলে তো কথাই নেই। মনে হচ্ছে এটাই তাদের জীবনের শেষ মার্কেট। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কোন তোয়াক্কা তো দূরের কথা সঠিকভাবে মাস্ক ও পরিধান করছেন না মার্কেটে আসা মানুষজন ও অধিকাংশ দোকানদার। এছাড়া উপজেলার অধিকাংশ জায়গায় দেদারছে চলছে কোচিং বাণিজ্য। পুলিশ ও প্রশাসনের গাড়ি না দেখলে মাস্ক পরিধান করছেন না অনেকেই। যদিও সবার উচিত নিজ দায়িত্বে মাস্ক পরিধান করে সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে পুলিশ ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করা।
গতকাল রবিবার বিকাল ও আজ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জীবননগর ও এর আশেপাশের মার্কেটগুলোতে যে পরিমাণ ভিড় হচ্ছে তা দেখে বোঝার উপায় নাই দেশে চলছে মহামারী করোনার ভাইরাসের মারাত্মক ছোবল। সোমবার সকালেও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেজাউল ইসলাম (৫৬) নামের এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি পৌরশহরের থানা কাউন্সিলপাড়ার খালেক সিকদারের ছেলে। গত ৭ই এপ্রিল ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ৮ই এপ্রিল তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ৯ই এপ্রিল সকাল ১০টার সময় তিনি সদর হাসপাতালের রেডজোনে ভর্তি হন। এছাড়া প্রতিদিনই জেলায় নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে একাধিক রোগী।
এখন দেখার বিষয় ১৪ই এপ্রিল থেকে কার্যকর হতে যাওয়া লকডাউন মানুষজন কীভাবে গ্রহণ করে। যদিও ওই দিন থেকেই পুলিশ ও প্রশাসন জনসাধারণকে লকডাউন মানাতে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে থাকবে বলে আগে থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আর সেটি বুঝতে পেরেই হয়তো আগেভাগেই মার্কেটের কাজ সেরে নিচ্ছেন সর্ব-শ্রেণি পেশার মানুষজন। তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালন না করলে বাংলাদেশও যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হবেনা তা বলার ক্ষমতা মনে হয় কারো নেই। তাই নিজের জন্য না হলেও দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে সবারই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।