রহমতউল্লাহনঃ ওগাঁয় প্রায় সারে ১৬ লাখ টাকা মূল্যের কালী ও শিব যৌথ কষ্টি পাথরের একটি মূর্তির দুটি ভাঙ্গা খন্ড উদ্ধার করেছেন মহাদেবপুর থানা ও নওহাটামোড় ফাঁড়ি পুলিশ। সদ্য খননকৃত একটি পুকুর থেকে মূর্তি পেয়ে জৈনক ব্যাক্তি বাড়িতে রেখেছেন এমন খবর পেয়ে ১৩ মে বৃহস্পতিবার প্রথমে স্থানিয় নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই জিয়াউর রহমান ঘটনাস্থলে পৌছে সত্যতা পেয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে জানান।ঘটনাটি জানার পর সাথে সাথে নওগাঁর মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে পৌছে মূর্তির ভাঙ্গা অংশ দুটি উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়।
স্থানিয় জনি পোদ্দার সহ বেশ কয়েকজন জানান, ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টারদিকে মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর ইউপির গনেষপুর গ্রামের জতিষ চন্দ্র মন্ডল (৬৬) এর মৃতদেহ সৎ কাজ করার জন্য পার্শ্ববর্তী তেজপাইন গ্রামের মহা-স্বশানে নিয়েগিয়ে আমরা সহ মৃতের স্বজনরা সৎকাজ করাকালে সকাল ৯ টারদিকে মহা-স্বশানে সদ্য খননকৃত পুকুরের পারের মাটিতে প্রথমে মূর্তির মতো দেখতে পান জৈনক ব্যাক্তি এরপর ঘটনাস্থলে থাকা লোকজনের সামনেই মাটি সরিয়ে একটি কালী ও শিব যৌথ মূর্তির দুটি খন্ড পাওয়া গেলে এক পর্যায়ে উপস্থিত লোকজননের সীদ্ধান্তে তেজপাইন গ্রামের জৈনক ভীম অধিকারীর হেফাজতে তার বাড়িতে নিয়ে রাখলে খবর পেয়ে পুলিশ এসে উদ্ধার করেন।
স্থানিয় ইউপি সদস্য বিপুল কুমার হাজরা বলেন, সম্ভাব্য মূর্তিটি ঘটনাস্থল মহা-স্বশানের স্থানে মাটির নিচে ছিলো এবং ভিকু মেশিন দিয়ে সেখানে পুকুর খননকালে ভিকু মেশিনের আঘাতে ভেঙ্গে গিয়ে মাটির সাথে পাড়ে এসে পরলে আকাশের বৃষ্টিতে সেটির কিছু অংশ মাটি থেকে বের হওয়ায় দেখতে পেলে তা তুলে এনে ভীম অধিকারীর বাড়িতে রাখেন গ্রামের লোকজন। তিনি আরো জানান, খবর পেয়ে উদ্ধারের জন্য পুলিশ আসার পরও গ্রামের কতিপয় লোকজন পুলিশের কাছে মূর্তির অংশ দুটি হস্তান্তর করতে চাচ্ছিলো না, তবে মহাদেবপুর থানার ওসি মহোদয় লোকজনকে বুঝিয়ে ঘটনাস্থল থেকে মূর্তির দুটি ভাঙ্গা অংশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে গেছেন।
ঘটনাস্থলে থাকা স্থানিয় দু জন ব্যাক্তি নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে বলেন, ভীম অধিকারী সহ আরো কয়েকজন শলাপরামর্শ করে মূল্যমান কষ্টি পাথরের মূর্তিটির অংশ দুটি গায়েব করার পায়তারা করছিলেন এবং সেই জন্যই ঘটনাস্থল মাঠের মধ্যে থেকে অংশ দুটি ভীম অধিকারীর বাড়িতে নেয়া হয় জানিয়ে আরো বলেন, সম্ভাব্য পুলিশ পৌছার পূর্বেই তারা উদ্ধারকৃত অংশ দুটি থেকে কিছু অংশ ভেঙ্গে গোপন করেছেন বলেই জনমনে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা, এজন্য পুলিশ প্রশাসনের আশুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ প্রতিবেদককে বলেন, মূর্তির খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স সহ দ্রুত তেজপাইন গ্রামে পৌছে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা সহ বিকাল পোনে ৩ টারদিকে মূর্তির দুটি অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত কষ্টি পাথরের দুটির অংশবিশেষের ওজন একটি ১১ কেজি ৮ শ’ ২০ গ্রাম ( কালী মূর্তির নীচের অংশ যেখানে শিবের অবয়ব আছে), এ অংশের মূল্য অনুমান ১১ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং অপর অংশবিশেষের ওজন ৪ কেজি ৫ শ’ ৮০ গ্রাম ( এটি মূর্তির উপরের অংশ), মূল্য অনুমান ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।