জাহিদুল ইসলাম নিক্কনঃ পাবনার সাঁথিয়ায় স্ত্রী হত্যার অভিযােগে রাকিবুল ইসলাম ( ২৫ ) নামের এক যুবকরে আটক করেছে পুলিশ । ঈদের আগের রাতে ১৩ মে স্ত্রীকে হত্যা করে নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন রাকিবুল । শনিবার ( ১৫ মে ) সকাল দশটার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় ।
নিহত কানিজ ফাতেমা ( ২০ ) বেড়া পৌর সদরের শম্ভুপুর মহল্লার আব্দুল কাদেরের মেয়ে । আটক রাকিবুল ইসলাম সাঁথিয়া পৌর সদরের ফেছুয়ান মহল্লার চাঁদু শেখের ছেলে । পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম পরিবারের বরাত দিয়ে জানান , ৭/৮ মাস আগে রাকিবুলের সাথে বিয়ে হয় ফাতেমা খাতুনের । বিয়ের পর থেকে তাদের মনােমালিন্য ও পারিবারিক কলহ চলছিল ।
গত ২৮ এপ্রিল স্ত্রী ফাতেমাকে তার বাবার বাড়িতে রেখে যায় রাকিবুল । ঈদের আগে নিয়ে যাবার কথা ছিল । এর মধ্যেই স্ত্রীকে হত্যার ছক কষতে থাকেন রাকিবুল । ঈদের আগেরদিন ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যার পর বেড়ানাের কথা বলে মােবাইল ফোনে স্ত্রী ফাতেমাকে বাড়ির বাইরে বের হতে বলেন রাকিবুল । তবে তার বাইরে বের হওয়ার কথা তার পরিবারের কাউকে বলতেও নিষেধ করেন । পরে স্বামীর ডাকে ফাতেমা বাইরে বের হলে তাকে মােটরসাইকেলে নিয়ে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ব্রিজের কাছে নিয়ে যায় ।
সেখানে নিরিবিলি জায়গা পেয়ে মােটরসাইকেল থামিয়ে স্ত্রীকে দাঁড় করিয়ে রেখে একটু দূরে সরে যায় । কিছুক্ষণ পর পেছন থেকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাতেমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন রাকিবুল। পরে রাস্তার পাশে ইছামতি নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার মধ্যে ফাতেমার মরদেহ লুকিয়ে রেখে বাড়ি চলেন তিনি । যাবার আগে স্ত্রী ফাতেমার মােবাইল ফোন থেকে আমাকে মাফ করাে , অন্য একটি ছেলের সাথে আমার সম্পর্ক আছে , তাই চলে গেলাম ‘ এই কথা লিখে নিজের ফোনে ও ফাতেমার ভাইয়ের ফোনে মেসেজ পাঠান রাকিবুল ।
মেয়ের খোঁজ না পেয়ে বাবা কাদের বেড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন । এরপর তদন্তে নামে পুলিশ । প্রথমে স্বামী রাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে । কিন্তু তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান । তিনি পুলিশকে তার স্ত্রীর মেসেজের কথাও জানান । এরপরই সন্দেহ হয় পুলিশের । শুক্রবার ( ১৪ এপ্রিল ) রাতে স্বামী রাকিবুলকে আটক করে আরাে জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি । পরে তার দেয়া স্বীকারােক্তি ও তথ্য মতে শনিবার ( ১৫ মে ) সকালে নদীর ক্যানেল থেকে ফাতেমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।
হত্যার কারণে সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান , আটক রাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদে যেটুকু মনে হয়েছে বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না । এ নিয়ে মনােমালিন্য ও সাংসারিক অস্থিরতা ছিল । এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিলেন রাকিবুল । নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানাে হয়েছে এবং এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান বেড়া থানার ওসি অরবিন্দ সরকার।