মজনুঃ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দলদলিয়া এবং থেতরাইয়ের আবাদি জমি। কুড়িগ্রামের উলিপুরে অপরিকল্পিতভাবে ২১ বছর আগে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্লুইস গেটটি বর্তমানে কোনো কাজে আসছে না। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় তা ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তিস্তার ভাঙনে বুড়িতিস্তা নদীর উৎসমুখে নির্মিত স্লুইস গেটটি নদীগর্ভে চলে যায়। পরে পাউবো অপরিকল্পিতভাবে বুড়িতিস্তা নদীর একটি মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেয়। অপর অংশের থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার নামক স্থানে নতুন করে স্লুইস গেটটি নির্মাণ করে। কিন্তু পাউবোর নজরদারি ও সংস্কারের অভাবে বর্তমানে স্লুইস গেটটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, তিস্তার নদীর ভাঙনে বুড়িতিস্তা নদীর উৎসমুখে নির্মিত স্লুইস গেটটি নদীগর্ভে চলে গেলে বুড়িতিস্তা নদীর এক পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে তা বন্ধ করেন দেওয়া হয়। অপর অংশে ১৯৯৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার নামক স্থানে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪ গেট বিশিষ্ট একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করেন। কিন্তু নির্মাণের অল্পসময়ের মধ্যে ২৪টি গেটের ১৮টি অকেজো হয়ে পড়ে।
এদিকে, স্লুইস গেটের উৎসমুখে তিস্তা নদী থেকে পলি মাটি জমে তা ভরাট হয়ে যাওয়ায় কোনো দিক থেকেই পানি নিষ্কাশন হয় না। এ পরিস্থিতিতে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে বুড়িতিস্তা নদীর দক্ষিণ অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে বুড়িতিস্তা নদীর দুই পাড়ের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও শত শত পরিবারকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বুড়িতিস্তা নদীর প্রায় ২২ কিলোমিটার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন থেকে চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ পর্যন্ত ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেললে নদী দখল করে নেন দখলদার। সম্প্রতি উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুনে স্লুইস গেট নির্মাণসহ চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল পর্যন্ত বুড়িতিস্তা নদী খনন ও দখলমুক্ত করার জন্য উলিপুর প্রেস ক্লাব ও রেল, নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি আন্দোলন শুরু করেন।
এরই প্রেক্ষিতে সরকার বুড়িতিস্তা খননের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু দক্ষিণ অংশের দলদলিয়া ইউনিয়নের দেবত্তর থেকে নাজিমখাঁন পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার খনন না করায় এ অঞ্চলের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।কুড়িগ্রাম পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, স্লুইস গেটটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব গেটগুলো সংস্কার করে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক করা হবে।