আমিরুল হকঃ সুইজারল্যান্ডে চলমান বিশ্বকাপ আর্চারিতে শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। চমক দেখিয়ে রিকার্ভ মিশ্র ইভেন্টের ফাইনালে উঠেছেন দিয়া সিদ্দিকী ও রোমান সানা জুটি । এ জুটির মধ্যে একজন নীলফামারীর মেয়ে দিয়া সিদ্দিকী। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কানাডাকে ৫-৩ সেটে হারিয়েছেন বাংলাদেশের এই দুজন আর্চারি। আজ রোববার স্বর্ণ জয়ের লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস।
এর আগে ১/১২ এর খেলায় ৫-৩ সেট পয়েন্টে ইরানকে এবং ১/৮ এর খেলায় ৫-১ সেট পয়েন্টে জার্মানিকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেন রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। আর কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনকে ৫-৪ সেট পয়েন্টে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেন তারা। দিয়া সিদ্দিকী ২০১৯ সালে ইসলামিক সলিডারিটি আর্চারির আন্তর্জাতিক আসরে প্রথম স্বর্ণ জয় করেন। জাতীয় আর্চারি দলের অন্যতম সদস্য দিয়া প্রথম আন্তর্জাতিক অভিষেকেই স্বর্ণপদক জয় করে দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন।
নীলফামারীর পাইকপাড়া মধ্য হারওয়া গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক নূর আলম সিদ্দিকীর দু’ছেলে আর এক মেয়ের মধ্যে বড় দিয়া সিদ্দিকী। দিয়া সকাল হলেই বই নিয়ে ছুটতেন নীলফামারীর আনন্দ নিকেতন মডেল স্কুলে। টিফিন পিরিয়ডে মাঠে খেলাধুলা করতেন। দুপুরে এসে মায়ের সঙ্গে হাত লাগাতেন সংসারের কাজে। সাংসারিক কাজে মা শাহনাজ বেগম সহযোগিতা করলেও তার মন পড়ে থাকত খেলার মাঠে। তবে সেভাবে বড় কোনো জায়গায় তার খেলা হয়ে ওঠেনি। সেই সুযোগটি এসে যায় ২০১৬ সালে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময়। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের
অভিভাবক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ওই বছরের নভেম্বরে সারা দেশের মতো নীলফামারীতেও আয়োজন করে প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচির।
দিয়ার উচ্চতা (৫ ফুট ৪ ইঞ্চি) দেখে নীলফামারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক খায়রুল ইসলাম তীর ধনুকের (আর্চারি) খেলাতেই তাকে মনোনিবেশ করতে বলেন। নীলফামারীতে আর্চারির প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যান দিয়া। পরবর্তী ভর্তি হন বিকেএসপিতে। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। দিয়া সিদ্দিকীর বাবা নুর আলম সিদ্দিকী জানান, আমার মেয়ে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বের কাছে প্রতিনিধিত্ব করছে যা নীলফামারীবাসীসহ পুরো দেশের জন্য গর্বের বিষয়। আপনারা সবাই দোয়া রবেন রিকার্ভ মিশ্র ইভেন্টে দিয়া সিদ্দিকী ও রোমান সানা জুটি যেন বাংলাদেশের হয়ে ফাইনালে জিততে পারে।