শাকিল আহমেদ : জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে বহমান যমুনা নদীর করাল গ্রাসে হাজারো পরিবার ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। অবস্থান নিয়েছে পরিকল্পনাহীন ভবিষ্যৎ জীবনে আবার অনেকেই পাড়ি জমিয়েছেন অজানা গন্তব্যে।
মোছা বেহুলা (৭২) তাদেরই একজন। আশির দশকে উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে যমুনা নদী সংলগ্ন একটি সরকারি জমিতে ছিল স্বামী সংসার নিয়ে বসবাস। পেতেছিল স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখের সংসার।
নব্বই দশকে হঠাৎই সুখের সংসারকে বিষাদে পরিনত করে নিঃস্ব করে দেয় ভয়ংকর আগ্রাসী যমুনা নদী। গ্রাস করেনেয় ভিটামাটিসহ সমস্ত সম্পদ। আশ্রয় নেন তৎকালীন পিংনা ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম ছানোয়ার হোসেন এর পরিত্যাক্ত গরু ও লাকড়ি রাখার ঘরে। সেখানে দীর্ঘদিন বসবাসের পর স্বামী হারা হন বেহুলা বড় ছেলে পাড়ি জমান রাজধানীতে সেখানেই আবস্থাননেয়। ছোট ছেলে দিন মুজুর হেলালকে নিয়ে বসবাস। পরে বসবাসরত ভুমিটি মালীকানা স্থানান্তর হওয়ায় আশ্রয়ের কোন স্থান না পেয়ে ছোট ছেলের মেয়ের স্বামীর বাড়ীতে( নাতির) একটি পরিত্যাক্ত গোয়াল ঘরে বৃদ্ধা বেহুলা ছেলে দিন মুজুর হেলাল ও ছেলের বউ রওশনারা নিয়ে প্রায় ৫ বছর যাবৎ বসবাস করছেন। জীবণ চালাচ্ছেন সরকারের দেয়া বয়স্ক ভাতার টাকা ও অন্যের দয়া দক্ষিনায়।
বেহুলা বলেন, পোলাড়া নিজেই চলতে পারে না ঠিক ভাবে খাওয়ন পায়না আমারে কোন থাইকা দিবো আমি ভাতার টেহা ও মানসের কাছ থাইকা চাইয়া চলি। ঘর না থাকায় আমি আমার ছেলে, ছেলের বউ নিয়ে নাতনীর ঘোয়াল ঘরে থাহি খুব কষ্টহয় শেখের বেটি হাসিনা যদি সাহায্য করে আর একটা ঘর দেয় তাইলে যে কয়ডাদিন বাচি এ্যাল্লা শান্তিতে বাচমু।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়াম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম ছানোয়র হোসেন বলেন, এ পরিবারটি সারা জীবনটাই আমার এবং অন্যের পরিত্যাক্ত গোয়াল ঘরে কাটিয়ে দিলো। তাই সরকারের নিকট আমার দাবী এ পরিবারটিকে একটি আশ্রয়ের ব্যাবস্থা যাতে করে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, যদি এরকম কোন পরিবার থাকে তাহলে তদন্ত করে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।