হাসেম আলী হৃদয়: করোনা প্রতিরোধে গণসচেততা বৃদ্ধিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭দিনের লকডাউনের ৪র্থ দিন চলছে। লকডাইনের ৪র্থ দিনেও জেলা সদরের ২৭টি স্থানে পুলিশ চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের ১২টি মোবাইল কোর্ট কাজ করছে। তারা জেলার সর্বত্রে ঘুরাঘুরি অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য ১২টি মোবাইল কোর্ট বিভিন্ন স্থানে গত তিনদিনে ৩২৮টি মামলায় প্রায় ২লাখ ৪২হাজার ৭শ টাকা জরিমানা করেছেন। তার মধ্যে প্রথম দিন ১১২টি মামলায় ৮৮হাজার ৮শ টাকা, দ্বিতীয় দিন ১৭৪টি মামলায় ১লাখ ১৮হাজার ১শ ৫০ টাকা এবং তৃতীয় দিন ৫২টি মামলায় ৩০ হাজার ৫শ ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান ৪র্থ দিনেও অব্যাহত রয়েছে। তবে ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি।
শিবগঞ্জ, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর, নাচোল ও সদর থানার রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশী তৎপরতা চলছে। তাছাড়া জেলার ৪৫টি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে স্থানীয় হাট বাজারে দোকান পাট বন্ধ রাখতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি থানার পুলিশ কয়েকটি টিমে ভাগ হয়ে লকডাউন সফল করতে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শিবগঞ্জ থানার মনাকষা শিবগঞ্জ মোড়, মনাকষা ঈদগাহ মোড়, খাসের হাট বাজার, দূর্লভপুর বাজার, কানসাট বাজার, ত্রিমোহনী মোড়, রসুলপুর মোড়ম ইসরাইল মোড়, ভোলাহাটের কলেজ মোড়, উপজেলা চত্বর, বড়গাছী বাজার, ফুটানী বাজার, গোমস্তাপুর উপজেরলার গোমস্তাপুর বাজার, আড্ডা মোড়, রহনপুর খোয়াড় মোড়, রহনপুর কলেড় মোড়, গোমস্তাপুর উপজেলার আশপাশ ও নাচোল উপজেলার প্রতিটি মোড়ে পুলিশী টহল জোরদার থাকলেও মাঝে মাঝে যানবাহন চলাচল করতে দেখে গেছে। তবে দূরপাল্লার কোন গাড়ি চলাচল করছে না। মনাকষা, রানীহাটি মেস্তার বাজার, মনাকষার সাহাপাড়া বাজার ও তারাপুর বাজার ও ঠুঠাপাড়া বাজারে বড় বড় মুদিখানা ও রডসিমেন্ট সহ বিভিন্ন দোকান পাট খোলা দেখা গেছে। যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণার পরই গত সোমবার (২৪ মে) বিকাল থেকে অদ্যবদি মাইকিং করা অব্যাহত রেখেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিম সুপার এ এইচ এম আব্দুর রকিব জানান, আমরা জেলার প্রধান রুট দ্বারিয়াপুর, আমনুরা ও শিবগঞ্জে সবসময় পুলিশ মোতায়েন রেখেছি। তাছাড়াও মোবাইল কোর্টেও সাথে পুলিশের একটি দল কাজ করছে এবং প্রতিটি থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশের একটি করে দল নিয়ে থানার সর্বত্রে পর্যবেক্ষণ করছেন।
তিনি আরো বলেন, আশা করি আমরা লকডাউনে সফল হবো এবং আগামী রবিবারের মধ্যে করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমে আসবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব আলরাব্বী সহ অন্যান্য উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা বলেন, উপজেলার পুলিশ, বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেটসহ ভ্রাম্যআদালত মোতায়েন রয়েছে। সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সরকারী নির্দেশনার বাইরে সকল যানবাহন যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বী বলেন, লকডাউনের ৪র্থ দিনে মনাকষা, খাসের হাট, রানীহাট্টি মেস্তার মার্কেট, কানসাট, শিবগঞ্জ, চামাবাজার সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত তিন মামলায় ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ৪র্থ লকডাউন আরো কঠোর হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা: জাহিদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী জানান গত ২৪ঘন্টায় আরো ৩৯জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হযেছে। তবে কোন মাররা যায়নি। তিনি আরো জানান প্রথম থেকে এপর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মারা গেছে ২৮জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১হাজার ৫শ ৬৮জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪শ ২২জন, মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯হাজার জনের। প্রথম বার টিকা প্রদান করা হয়েছে ৫০ তহাজার জনকে, দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে ২০ হাজার ৫শ জনকে। টিকা সরবরাহ না থাকায় বাকীরাকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি আরো বলেন সোনমসজিদ স্থল বন্দর সহ জেলা ব্যাপী লকডাউন আরো কয়েকদিন কঠোর ভাবে লকডাউন চললে করোন সংক্রমন অনেকটা কমে যাবে আশা করছি।