বিশেষ সংবাদাতা (নাটোর ৪ আসন): পঞ্চগড়ে মুসল্লীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে নাটোরের বড়াইগ্রামের প্রকৌশলী জাহিদ (২৪) নিহত হয়েছেন। সে সদ্য বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষায় পাশ করেছে। জাহিদ নাটোরের বড়াইগ্রামের কাছুটিয়া গ্রামের আবু বক্কারের ছেলে। আহমদিয়া অনুসারী হিসেবে সে তার পিতা ও চাচাদের সাথে পঞ্চগড়ে তিনদিনের আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বার্ষিক জলসায় গিয়েছিল। এ সম্মেলনে শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
এ জলসা বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড় শহরে গতকাল আহমদিয়া বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে আরিফুর রহমান (২৮) ও জাহিদ হাসান (২৩) নামের দুই তরুণ নিহত হন। সংঘর্ষে পুলিশের ৯ সদস্য ও ২ সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। দুপুরে পঞ্চগড় শহরের শেরেবাংলা পার্কসংলগ্ন মহাসড়কে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভ থামাতে পুলিশ কয়েকবার রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, শেষ নবীকে অস্বীকার করে অন্য কাউকে যে নবী মানবে তাকে মুসলিম বলা যেতে পারে না।
আহমদিয়ারা গোলাম আহমদকে নবী মনে করে, তারা কাফের। ইসলামের নামে তাদের কোনো জলসা আয়োজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম মেনে নিতে পারে না। তাদের জলসা বন্ধ ঘোষণা করতে হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার একই দাবিতে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল আহমদিয়া-বিরোধীরা। প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরোধ চলে। পরে বিকাল ৩টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমঝোতার আশ্বাস দেন। পরে মুসল্লিরা বিক্ষোভ থেকে সরে যান। উল্লেখ্য, প্রতি বছরের মতো এবারও পঞ্চগড়ের আহমদনগরে সালানা জলসার আয়োজন করেছে আহমদিয়া মুসলিম জামাত। পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি তৎপর রয়েছে। কোনো প্রাণহানি যাতে না ঘটে সেদিকে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।