যুবদলের নেতা হত্যাকাণ্ডে ছাত্রশিবিরকে জড়ানোকে মিথ্যাচার জানালেন জামায়াতের নেতৃবৃন্দ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৪, ২০২৫
মো. আরিফ। ।   বরগুনার পাথরঘাটায় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে যুবদল নেতা নাসির উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যায় জড়িতরা ‘ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডার’ বলে দাবি করেছে পাথরঘাটা উপজেলা ও পৌর যুবদল। এ ঘটনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ সন্ধ্যা ৬টায় বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে । এতে ওই হত্যাকাণ্ডে ছাত্রশিবিরকে জড়ানোকে মিথ্যাচার বলে আখ্যা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে উপজেলা শিবির সভাপতির ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় গত ১ জানুয়ারি একটা অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেই হত্যাকাণ্ডটি দুটি পক্ষের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মো. নাসির নামে এক যুবদল কর্মী হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। যার বাস্তব সাক্ষী এলাকাবাসী এবং পাথরঘাটার স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। কিন্তু পাথরঘাটার একটি রাজনৈতিক দলের কিছু কর্মী ও নেতৃবৃন্দ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এই হত্যাকাণ্ডটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপর চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের দায়িত্বশীল পর্যায়ের কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে যাচাই বাছাই ছাড়াই উক্ত রাজনৈতিক দলটির নেতা কর্মীদের চাপিয়ে দেয়া অভিযোগের সাথে সুর মিলিয়ে আগাম ধারণা প্রকাশ করছেন। প্রশাসনের কোন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে এমন একটি অপরাধ সম্পর্কে তদন্ত ছাড়াই ধারণা প্রকাশ করা তাদের দায়িত্ব ও পেশাদারিত্বের পরিপন্থি ও বিধি লঙ্ঘনের শামিল। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলের কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের কিছু নেতা কর্মীদের মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে যে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা কেবল রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূতশই নয় বরং স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের দীর্ঘ সহযাত্রীদের প্রতি চরম অকৃতজ্ঞতার শামিল। জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা মুহিবুল্লাহ হারুন বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শিক সুশৃঙ্খল শান্তিকামী সংগঠন। আমরা কোন সহিংসতা বা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তাই আপনাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বরগুনা জেলা শাখার পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পাথরঘাটা উপজেলা এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোন নেতাকর্মী জড়িত নয়। জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, একটা দুর্বৃত্ত শ্রেণি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাথরঘাটা থানা দক্ষিণ শাখার সভাপতি হাফেজ মো. রাকিব হাসানকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘৃণা ও ন্যাক্কারজনক হামলা করেছে। শিবির সভাপতি মো. রাকিব হাসান সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নেতৃবৃন্দ পাথরঘাটা তথা বরগুনার সর্বস্তরের জনগণকে এই ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। জামায়াত নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে তাদের সুস্পষ্ট অবস্থান এবং কিছু দাবি তুলে ধরেন। জামায়াতের নেতারা সাম্প্রতিক এই ঘটনায় নাসিরে পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন এবং হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। একইসঙ্গে ছাত্রশিবিরের থানা সভাপতি হাফেজ মো. রাকিব হাসানের ওপর ঘৃণ্য হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং এতে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান। বিএনপি নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরকে জড়িয়ে ‘উদ্দেশ্যমূলক ও শিষ্টাচার বহির্ভূত’ অভিযোগের চেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য দেন- জেলা নায়েবে আমির মাওলানা এসএম আফজালুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. আসাদুজ্জামান আল মামুন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাস্টার শামীম আহসান, পাথরঘাটা পৌর আমির মাওলানা বজলুর রহমান, বরগুনা পৌর আমির মাওলানা আব্দুল জলিল প্রমুখ।