শরিয়তপুরে কলেজ ছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩:১৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫
আব্দুর রহিম।।  শরীয়তপুরের জাজিরায় এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা হাবিব জমাদ্দার ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) আহত শিক্ষার্থীর মামা মো: নাসির জমাদ্দার বাদী হয়ে  হাবিব জমাদ্দারসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ্য করে ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামী করে জাজিরা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।এর আগে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাজিরা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের আহাদ্দি বয়াতি কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী পালেরচরের বাসিন্দা মাইনদ্দিন মোল্লার মেয়ে মাহিমা আক্তার। তিনি বিকেনগর বঙ্গবন্ধু কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। জাজিরা পৌরসভার আহাদ্দি বয়াতি কান্দি মামার বাড়ীতে থেকে পড়াশোনা করছে মাহিমা আক্তার। এঘটনায় ঐ শিক্ষার্থী মাহিমা ও তার মামা জসিম জমাদ্দারও আহত হয়েছেন। জানা যায়, হামলায় নেতৃত্ব দেয়া হাবিব জমাদ্দার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার একজন এজাহারভুক্ত আসামী। থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিন আগে হাবিব জমাদ্দার এলাকার নিরীহ মানুষদের হয়রানি করতে বিভিন্ন নিরপরাধ ব্যক্তিদের নামে আদালতে একটি চাঁদাবাজি মামলা করেন। সে মামলায় থানা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় আদালত। আদালতের নির্দেশে পুলিশ এলাকায় তদন্তে গেলে মামলা সম্পর্কে এলাকার অধিকাংশ মানুষ সত্যিটা জানায় পুলিশকে। সেসময় হামলায় আহত শিক্ষার্থীর কাছেও পুলিশ জানতে চাইলে ঐ শিক্ষার্থী সত্যিটা জানায়। এরপর ঐ তদন্তে হাবিব জমাদ্দারের আদালতে করা মামলার অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে পুলিশে প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে হাবিব জমাদ্দারের দায়ের করা মামলা খারিজ হয়ে যায়। এতে তিনি যারা তদন্তের সময় পুলিশের কাছে স্বাক্ষী দিয়েছেন সকলের উপর ক্ষুব্ধ হোন। পরে শনিবার দুপুরের দিকে হাবিব জমাদ্দার দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ তার ছেলে ও অনুসারীদের নিয়ে ঐ শিক্ষার্থীর বসবাস করা বাড়ীতে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার সময় ঐ শিক্ষার্থী নিরাপত্তার জন্য এলাকার সাবেক কাউন্সিলরের বাড়ীতে লুকাতে গেলে সেখান থেকে তাকে ধরে এনে বেদম মারধর করা হয়। এসময় তাকে বাঁচাতে তার মামারা আসলে তাদের উপরও হামলা চালায়। এছাড়াও ঐ শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করে অন্যান্য স্বাক্ষীদেরও মারধর করেন হাবিব ও তার অনুসারীরা। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আহত শিক্ষার্থী ও তার মামাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে দেন।  বর্তমানে ঐ শিক্ষার্থী ও তার মামা চিকিৎসাধীন রয়েছে। মেয়ের সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার দাবী করে শিক্ষার্থী মাহিমার বাবা মাইনদ্দিন মোল্লা কালবেলাকে বলেন, “আমাদের বাড়ী থেকে কলেজে যাতায়াতে সমস্যা হয় তাই আমার মেয়ে মামার বাড়ীতে থেকে পড়াশোনা করছে। ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। টেস্ট পরীক্ষা চলছে। এই সময়ে আমার মেয়েটাকে নৃশংসভাবে মারধর করা হলো। আমি এর সঠিক বিচার চাই।” স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সেরু জমাদ্দার বলেন, হাবিব জমাদ্দার তার লোকজন নিয়ে মেয়েটাকে বেদম মারধর করে। মেয়েটি প্রাণ বাঁচাতে আমার বাড়ীতে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানে গিয়েও মেয়েটিকে মারধর করে। এর সঠিক বিচার হওয়া উচিৎ।
আহত মাহিমার মামা ও মামলার বাদী নাসির জমাদ্দার বলেন, আমার ভাগ্নী পুলিশের কাছে সত্য কথা বলার কারনে ওরা আমার ভাগ্নীকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আল্লাহ্ বাঁচাইছে। আমি হাবিব জমাদ্দারসহ হামলাকারীদের কঠিন বিচার চাই। ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত হাবিব জমাদ্দারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা। ওরা আমার বাবাকে অনেক মারধর করেছে। এখন আমার বাবাকে নিয়ে আমি হাসপাতালে আছি। এবিষয়ে জাজিরা থানার পরিদর্শক(তদন্ত) আব্দুস সালাম বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।