ষাটগম্বুজ মসজিদে বেড়েছে দেশী বিদেশী পর্যটক আনাগোনা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫:১৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২৪

মোঃ তরিকুল ইসলাম,বাগেরহাট।ষাট গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটির গায়ে কোনো শিলালিপি নেই। তাই এটি কে নির্মাণ করেছিলেন বা কোন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিল সে সম্বন্ধে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখলে এটি যে পীর খান জাহান আলী নির্মাণ করেছিলেন সে সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ থাকে না। ধারণা করা হয় তিনি ১৫শ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেন। এ মসজিদটি বহু বছর ধরে ও বহু অর্থ খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। পাথরগুলো আনা হয়েছিল রাজমহল থেকে। এটি বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটির মধ্যে অবস্থিত; বাগেরহাট শহরটিকেই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো এই সম্মান প্রদান করে।

বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদসহ প্রাচীনতম নিদর্শন দেখতে ছুটির দিনে বেড়েছে কয়েকগুণ দেশী বিদেশী দর্শনার্থী। শনিবার (০২ মার্চ) ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। এদিন সকাল থেকেই নানা বয়সী দর্শনার্থীদের পথচারণায় মূখর হয়ে উঠে ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দর্শনার্থীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এদিন প্রায় ৬ হাজার দর্শনার্থী আসছেন ষাটগম্বুজ মসজিদসহ প্রাচীনতম নিদর্শন দেখতে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

শুধু ষাটগম্বুজ মসজিদ নয়, খানজাহান (রহ.) মাজার, বাগেরহাটের চন্দ্রমহল, সুন্দরবন রিসোর্ট, পৌর পার্কসহ মুনিগঞ্জ ও দড়াটানা সেতুতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসব বিনোদন কেন্দ্রে এসেছেন দর্শনার্থীরা। বিনোদন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দ উপভোগ করছেন শিশুরা।

লালমনিরহাট থেকে পরিবার নিয়ে ষাটগম্বুজ মসজিদে ঘুরতে আসা আখি আক্তার বলেন, পাঠ্য বইতে পড়েছি বাগেরহাট হলো মসজিদের শহর। এত বছরের প্রাচীন সব মসজিদ দেশের কোথাও দেখা যায় না। দীর্ঘদিন ধরে ইচ্ছে ছিল ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে বাগেরহাটে আসার। কিন্তু সময় করতে পারিনি। অনেক চেষ্টা করে এবার সবাই মিলে আসলাম, প্রাচীনকালের মসজিদ দেখে খুব ভাল লেগেছে।

ঐতিহাসিক স্থান দেখতে ফেনি থেকে আসা মোঃ আসিব হোসেন নাহিদ বলেন, চাকুরীর কারণে সময় করে আসতে পারি না। তবুও ভাবলাম দেশের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখা দরকার। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর এখন যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক ভালো। তাই পরিবারের সকলকে নিয়ে আসলাম। ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখলাম, খানজাহানের মাজার দেখলাম। অনেক ভালো লেগেছে। ষাটগম্বুজ মসজিদসহ প্রাচীন আমলের নিদর্শন দেখে মুগ্ধ বলে জানান তিনি।

রাজধানীর ধানমন্ডী থেকে আসা হামিম বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল, তাই ছুটির দিন সকালে বন্ধুরা মিলে বাগেরহাট এসেছি। ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখে ভালো লেগেছে। পরিবেশটাও ভালো। মসজিদে নামাজ পড়ে প্রশান্তি পেয়েছি। এখানে হাজার হাজার দর্শনার্থী দেখে আরো বেশি ভালো লেগেছে।

প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরের বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান মোঃ যায়েদ বলেন, শীতও কমে গেছে, তাই ছুটিতে ষাটগম্বুজ মসজিদসহ জেলার ঐতিহাসিক এসব স্থাপনা গুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে। তবে শুক্রবার ছুটির দিনেও বেড়েছে কয়েকগুণ দর্শনার্থীর সংখ্যা। জনবল কম থাকায় দর্শনার্থী নিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। এসব পর্যটকদের জন্য ২০ জন আনসার সদস্য ও ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছে।