‎লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ২ নং উত্তর চরবংশি ইউনিয়নে জেলেদের চাল বিতরণে  ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

‎

‎৩১ মে ( শনিবার)  কয়েকজন ভুক্তভোগী কোথাও ন্যায় বিচার না পেয়ে গণমাধ্যমের কাছে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের ন্যায্য অধিকার পাওয়ার দাবী জানান।

‎

‎ভুক্তভোগীরা হলেন, ২নং উওর চরবংশীর ৮ নং ওয়ার্ডে  ইয়াসিন দেওয়ান তিনি ২৫ বছর ধরে জেলে,শাহজালাল দেওয়ান ৩০ বছর ধরে জেলে, মুজাফফর দেওয়ান ২০ বছর ধরে জেলে, তৈয়ব আলী ২২ বছর ধরে জেলে, মুহাম্মদ ইসমাইল হাওলাদার ৫০ বছর ধরে জেলে, জমির মাঝি ৪০ বছর ধরে জেলে ও ৬নং ওয়ার্ডের  বাবুল মাঝি ৪০ বছর ধরে জেলে তারা বলেন,  আমরা প্রকৃত জেলে হয়েও জেলে চাল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। অথচ অনেকেই চাল পাচ্ছে যারা কখনো নাও জালের কাছেও যায়নি। ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহাঙ্গীর বকশি আমাদেরকে চাল বিতরণের টোকেন দেয়নি,  আমরা না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর বকশি বলেন,বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি হারুন বকশি, বিএনপির ৮ নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি কেরামত  মাল ও মশিউর রহমান কাজী নাকি আমাদেরকে টোকেন দেয়নি। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবী ফিরে পাওয়ার দাবী  জানাচ্ছি।

‎

‎অভিযুক্তরা হলেন, ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার জাহাঙ্গীর বকশি,  ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার আলতাফ হোসেন জমাদ্দার,  ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মফিজ খান ও বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড নেতারা।

‎

‎তথ্য সংগ্রহে গিয়ে দেখা যায় ২নং উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষে নিহত জসিম হত্যার আসামী মোস্তফা গাজীর নেতৃত্বে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা উপস্থিত থেকে তাদের পছন্দের লোকদের মাঝে জেলে চাল বিতরণ করেন।

‎

‎৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার জাহাঙ্গীর বকশি বলেন, ” আমি এর সঙ্গে জড়িত না।  যাঁরা প্রকৃত জেলে আমি তাদেরকে টোকেন দিয়েছি। বরাদ্দ কম আসায় ৪৭ জনকে টোকেন দিতে পারিনি।

‎

‎উপজেলার মৎস অফিসের  ক্ষেত্র সহকারী মোশাররফ হোসেন  অভিযোগের বিষয়ে বলেন  আমি দুপুর ২টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত  চাল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলাম এসময়ে কোন অনিয়ম দেখিনি আগে পিছে হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা। জেলেদের মধ্যে টোকেন বিতরণ করেন স্থানীয় মেম্বাররা তারা কার্ড বিতরণে অনিয়ম করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‎

‎উপজেলা মৎস্য অফিসে  অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ”  নিষিদ্ধ সময়ে জটিকা আহরণ হতে বিরত থাকা জেলেদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এপ্রিল -মে/২০২৫ রায়পুর উপজেলায় ৩৯৩০ জেলে পরিবারের জন্য বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচীর আওতায় পরিবার প্রতি ৪০ কেজি হারে দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি মোট ৩১৪.৪০ মে.টন খাদ্যশস্য চাল বরাদ্দ পাওয়া যায় যা উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে উপকারভোগীদের মধ্যে  বন্টন করা হয়।  যার মধ্যে ১নং উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নে ২৭০ জন জেলে পরিবারের জন্য ২১.৬ মে.টন চাল, ২নং উত্তর চরবংশি ইউনিয়নে ২৬৩০ জেলে পরিবারের জন্য ২১০.৪ মে.টন চাল এবং ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে ১০৩০ জেলে পরিবারের জন্য ৮২.৪ মে.টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।  বিতরণের সময়ে আমাদের প্রতিনিধি ও ট্যাগ অফিসার উপস্থিত ছিলেন। চাল  বিতরণে অনিয়মের কোন অভিযোগ এখনো পাইনি।  অনিয়মের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‎

‎এবিষয়ে ২নং উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের প্রশাসক নিগার সুলতানা বলেন,  ” এখন পর্যন্ত কোন অনিয়মের অভিযোগ পাইনি,  অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “

‎

‎রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান খান অনিয়মের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ” আমি এক্ষুনি মৎস্য কর্মকর্তাকে বলে দিচ্ছি অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।