বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে ছাত্রলীগ হতে পদত্যাগ করলেন শরীফ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩, ২০২৪

আশিকুর রহমান চৌধুরী পনি।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলেন শরীফ মিয়া। শুক্রবার (২রা আগস্ট) রাতে নিজ ফেসবুক আইডি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। যা হুবহু তুলে ধরা হল।আমি মো: শরীফ মিয়া। নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রলীগ শাখার সহ সভাপতি পদ থেকে সজ্ঞানে পদত্যাগ করলাম।

২০১২ সালে গোকর্ণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে আমি পরিচয় লাভ করি!
২০২২ সালে নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়। যেদিন এই পদ টা পাই সেদিন শুধু একটা কথায় মনে হল সে সৃষ্টিকর্তা আমাকে হইতো মানুষের সেবা করার আরেকটি সুযোগ আমাকে দিয়েছে।

২০১২ থেকে ২০২৪ এই এক যুগে আমি ছাত্রনেতা হয়েও বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবো এর সুযোগ নিয়ে আমি কখনো কোনো বেনিফিট নেই নি! এই এক যুগে আমি ১০ টাকা কোন নেতা থেকে নিয়েছি বা ইনকাম করেছি এমন কেউ বলতে পারবে না।এমন কি বিভিন্ন নির্বাচনে ছাত্রলীগের যে ওয়ার্ড কেন্দ্রের খরচ দেয় সেই টাকা ও আমি হাতে নেই নি!নিজের, নিজের বাবার টাকায় ছাত্র রাজনীতি করেছি! মিটিং, মিছিল, সভা করেছি, নির্বাচন করেছি! জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়টুকু দিয়েছি!আমার ছাত্র রাজনীতির এক মাত্র উদ্দেশ্যে ই ছিলো দেশ ও মানুষের সেবা করা! ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা।

রাজনীতিতে আমার আদর্শ ছিলো শেখ মুজিব! আর মুজিবের আদর্শ দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসা।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর হাতে গড়া ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। এই দেশের প্রতিটি সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদান স্বরণীয় হয়ে থাকবে।আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ স্বাধীনতার পিছনে ছাত্রলীগ এর ভুমিকা ছিলো উল্লেখযোগ্য।ছাত্রলীগের মত একটি মহান সংগঠনের একজন কর্মী হতে পেরে অবশ্যই আমি গর্বিত।কিন্তু বর্তমানে রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আমি অনুভব করি ছাত্রলীগ তার ঐতিহ্য, আদর্শ থেকে সরে এসেছে এবং বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দল ই দেশ এবং দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করে না।এমনকি বঙ্গবন্ধু, তাজ উদ্দিনের যে আওয়ামিলীগ ছিলো গণমানুষের দল, তা ও এখন সুবিধাবাদী চাটুকারদের দখলে! এখন রাজনীতি কেবল ক্ষমতা, পদ পদবী, টেন্ডারের জন্য।

এটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত অভিমত।এখন আমার ছাত্রত্ব নেই এবং আমি বিবাহিত। একজন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য যে দায়িত্ব পালন করার কথা আমার মনে হচ্ছে সেটা পালন করতে আমি ব্যার্থ।অন্যায়ের বিপক্ষে কথা বলা, ছাত্রদের অধিকার, সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কথা বলার জন্য যথেষ্ট প্রাণশক্তি আমি হারিয়ে ফেলেছি।যে আদর্শ নিয়ে আমি রাজনীতি করতে চেয়েছিলাম, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি সেই আদর্শের প্রতিফলন করতে পারছি না।
আমার মনে হয় আমার জায়গায় এমন কেউ আসুক যে কিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির প্রতিফলন করতে পারবে। যে দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হবে।

আমরা প্রায় ই সমালোচনা করি।দেশের ক্রিকেট, ফুটবলের সভাপতি বা বিভিন্ন এম পি, মন্ত্রী ব্যার্থতা নিয়ে পদত্যাগ করে না কেনো!
এখন আমি আমার ব্যার্থতা নিয়ে পদত্যাগ করছি না কেনো সে প্রশ্ন ও আমি নিজেকেই করেছি।আমি আমার বিবেকবোধ থেকে, আমার ব্যার্থতা মেনে নিয়ে ছাত্রলীগের পদ থেকে সরে যাওয়ার স্বীদ্ধান্ত নিলাম! আমার এই স্বীদ্ধান্তের সাথে আমার পরিবার, বন্ধুমহলে কোন যোগসূত্র নেই।এইটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত স্বীদ্ধান্ত। এবং এ ও বলছি আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আওয়ামিলীগ এর আদর্শের রাজনীতির বিশ্বাস করি।তাই অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আমি কখনোই সম্পৃক্ত হব না এইটা শতভাগ নিশ্চিত।আমি কোন রাজনৈতিক পরিচয় বহন করতে চাই না।অন্য ৮-১০ জন সাধারণ মানুষের মত, সাধারণ মানুষের পরিচয় নিয়ে সবার মাঝে বেঁচে থাকতে চাই!