চাটখিলের সাবেক এমপি এইচ এম ইব্রাহীমসহ আওয়ামী লীগের ২৯ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১২:৪৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৪ মোঃ হানিফ।। নোয়াখালীর চাটখিলে বিএনপিকর্মী আলমগীর হোসেন আগুনের (৪০) মৃত্যুর দীর্ঘ সাড়ে ৮ বছর পর নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের সাবেক এমপি এইচ এম ইব্রাহিমসহ ২৯ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলার করা হয়েছে। আলমগীরের ভাই গোলাম মাওলা বাদী হয়ে গত বুধবার নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ হত্যা মামলা করে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বাদীপক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন কবির শিশির বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আমলি আদালত-৭-এর বিজ্ঞ বিচারক নুরজাহান বেগম মামলাটি গ্রহণ করেন। মামলায় এইচ এম ইব্রাহিমসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। বিচারক এরপর চাটখিল থানায় পূর্বে এ সংক্রান্ত কোনো মামলা হয়েছে কি -না তা আগামী (২২ অক্টোবরের) ভেতর রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। মামলায় সাবেক এমপি এইচ এম ইব্রাহিম, সাবেক মেয়র মোহাম্মদ উল্যা, সাবেক মেয়র ভিপি নিজাম উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হুদা শাকিল, বেলায়েত হোসেন, শাহজাহান খাঁন বাবুল, বজলুর রহমান লিটন, রাজিব হোসেন রাজু, আলী তাহের ইভুসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আবেদনে বলা হয়, আলমগীর হোসেন আগুন বিএনপির একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালের (২০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে দলীয় কর্মসূচি পালনের জন্য শহীদ মিনারে ফুলের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বাড়ি হতে চাটখিল বাজার আসার সময়ে ১১নং পোলের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে সাবেক এমপি এইচ এম ইব্রাহিম ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ উল্যার হুকুমে আওয়ামী লীগ নেতা বেলায়েত হোসেন ও নাজমুল হুদা শাকিল মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। এসময় তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আমার ভাইয়ের সারা শরীর রক্তাক্ত জখম করে। আসামিদের উপর্যুপরি আঘাতে রক্তপাত হতে হতে ভুক্তভোগী রাস্তার ওপর ঢলে পড়লে সকল আসামি একসঙ্গে তার হাত-পা ও গলায় চাপ দিয়ে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গলা কাটতে গেলে সে বাঁচার জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ছুরি দিয়ে পোচ দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে স্থান ত্যাগ করে। মামলার আবেদনে আরও বলা হয়, আসামিদের হাতে থাকা অস্ত্রশস্ত্র দেখে এলাকার আশপাশের সাধারণ মানুষ ভয়ে এদিক সেদিক পালিয়ে যায়। তারপর সাক্ষী সিরাজুল ইসলাম চাটখিল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ দাফন করতে বলেন। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাক্ষীরা আলমগীরের মৃত্যুকে পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড বলে মামলা গ্রহণ করার জন্য মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য অনুরোধ করেন। ভুক্তভোগীর ভাই গোলাম মাওলা পরবর্তীতে নিহতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চাইলে চাটখিল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিপোর্ট প্রদান না করে হুমকিধমকি দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর পরিবার জানতে পারে থানায় পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে। এতে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকে ভিন্ন কারণ উল্লেখ করে চিহ্নিত খুনি ও সন্ত্রাসীদের হত্যার অভিযোগ হতে আড়াল করা হয়। মামলার বাদী নিহতের ভাই গোলাম মাওলা বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে অপমৃত্যুর মামলা দিয়ে চিহ্নিত খুনি-সন্ত্রাসীদের অভিযোগ থেকে আড়াল করা হয়েছে। আমি আদালতে মামলা দায়ের করতে গেলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। তাই কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারিনি। (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ফলে দেশে স্বাধীনতা ফিরে আসায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছি। এ বিষয় জানার জন্য এইচ এম ইব্রাহিমের ফোনে বার বার চেষ্টা করে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। চাটখিল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফিরোজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিএনপিকর্মী আলমগীর হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় পূর্বে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। এতে সকল প্রমাণাদিসহ ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবার আট বছর পর আদালতে মামলার আবেদন করেছেন। আমাদেরকে আদালত যেভাবে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন আমরা সেভাবে (২২ অক্টোবরের) মধ্যে জমা দেব। SHARES সারা বাংলা বিষয়: