তুফানে উড়ে গেল ভূমিহীনের ঘর, নাই মাথা গোঁজার ঠাঁই দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১২:১২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৫ ইমন মিয়া।। নিভৃত অঞ্চলের বাসিন্দা মুক্তা রানী (৪৬)। হয়েছেন স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন। নিজের নেই জায়গা জমি। আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের ভিটায়। সেখানে একটি জরাজীর্ণ ঘরে সন্তান নিয়ে বসবাস। কাটে দুর্বিষহ জীবনযাপন। এরই মধ্যে ঝড় হাওয়ায় উড়ে গেছে তার সেই ঘরের চালা। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস এই ভূমিহীনের। সম্প্রতি এমনি এক অদ্ভুত চিত্র দেখা গেছে- গাইবান্ধার ধাপেরহাট ইউনিয়নের বোয়ালীদহ গ্রামে। এখানে উড়ে যাওয়া ভাঙা ঘরে নির্বাক চোখে তাকিয়ে ছিলেন ভূমিহীন মুক্তারানী। চরম হতাশায় যেন আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে তার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বোয়ালীদহ গ্রামের মৃত নছির উদ্দিনের মেয়ে মুক্তা রানী। তরুণী বয়সে বিয়ে হলেও সেই সংসার টিকেনি তার। এরপর কয়েক বছর পর ফের বিয়ে হয় পাশের উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি এলাকায়। সেখানে কোলজুড়ে জন্ম হয় একটি ছেলে সন্তান। এরই মধ্যে দ্বিতীয় এ স্বামী আরেকটি বিয়ে করেন। তখন থেকে স্বামী বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকছেন বাবার গ্রামের এলাকায়। পৈতৃক সূত্রে কোনো সহায় সম্বল বা জমিজমা না থাকায় আশ্রয় নেন অন্যের জমিতে। সেখানে একটি মাটির ঘর স্থাপন করে একমাত্র ছেলেকে (৪) নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। তবে বাঁশঝাড়ের মধ্যে এ বাড়িতে নেই কোনো টিউবয়েল ও টয়লেট সুবিধা। আর বিদ্যুৎবিহীন ভুতুড়ে বসবাস। জনপ্রতিনিধিদের কাছে পান না কোনো সহায়তা। জীবিকার তাগিদে বিক্রি করেন কচুশাক। যে শাক রাস্তার ধারে অযত্নে অবহেলায় বড় হয় সেই শাক সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাট-বাজার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি করেন মুক্তা রানী। এ থেকে কোনোমতে জীবিকা চলে তার। কোলের শিশুকে নিয়ে সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ঘরে একটু ভালোভাবে ঘুমাবেন তাও হয় না। জঙ্গলের ভেতরে জরাজীর্ণ ঘরে নির্ঘুম রাত কাটে এই ভূমিহীন নারীর। কয়েকদিন আগে রাতের বেলায় হঠাৎ তুফান এসে সব কিছু তছনছ করেছে। উড়ে গেছে সেই মাটির ঘরের চালা। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস। সন্তানকে নিয়ে বেড়েছে আরও দুর্দশা। বৈশাখের বৃষ্টিতে রাত্রিযাপন করতে হচ্ছে ভেজা বিছানায়। আর সন্তান নিয়ে শরীর ভিজে জবুথবু হয়ে থাকছেন এই মুক্তা রানী। নেই খাবারের ব্যবস্থাও। এখন কি হবে কই যাবে, সব শেষ হয়ে গেছে তার। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মুক্তা রানী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, স্বামী ছাড়া হয়ে সন্তানকে নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছি। অন্যের জমিতে একটি ঘর তুলে বসবাস করতাম। সেটাও আবার বাতাসে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মেলেনি প্রশাসনের কিংবা জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা। সকারিভাবে আমাকে একটি যদি আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে হয় কিছু আরামে থাকতে পারতাম। ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য জিল্লুর রহমান জানান, মুক্তা রানীর ঘরের চালা উড়ে গেছে সেটি জানা নেই তার। খতিয়ে দেখে তাকে সহযোগিতা চেষ্টা করবেন। সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ময়নুল হক বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তা রানীর ব্যাপারটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খোঁজ নেওয়া হবে। সম্ভব হলে তাকে সহযোগিতা করা যেতে পারে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: