ফ্যাসিস্ট সরকারে শাসনামলে হত্যার সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের দাবিতে ভয়েস অফ ভিকটিম ফ্যামিলি -এর উদ্যোগে মানববন্ধন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান। দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১২:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৪ মিজানুর রহমান।। ফ্যাসিস্ট সরকারে শাসনামলে হত্যার সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের দাবিতে ভয়েস অফ ভিকটিম ফ্যামিলি -এর উদ্যোগে মানববন্ধন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান। দেশের অন্যতম মানবাধিকার সংগঠন “ভয়েস অফ ভিকটিম ফ্যামিলি”-এর উদ্যোগে গত ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর বিচার বহির্ভূত ও কারা হেফাজতে হত্যার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারগুলো মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন শেষে সচিবালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। কারা হেফাজতে রিমান্ডকালীন এবং অন্যান্য সময়ে বিচার বহির্ভূত হত্যার সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিচারের দাবীতে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। “ভয়েস অফ ভিকটিম ফ্যামিলি” আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর বিচার বহির্ভূত ও কারা হেফাজতে হত্যার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারগুলো স্বজন হরোনোর সঠিক বিচারের দাবীতে সংশ্লিষ্টরা একত্রিত হন। এসময় মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্বজন হারানো পরিবারগুলো ‘‘উই ওয়ান্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনকোয়ারি’’ ও ‘‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। স্মারকলিপিতে ৫টি দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো — (ক) আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার, অতঃপর নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনাগুলোর সঠিক তদন্ত করতে হবে। (খ) বিচারের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। (গ) সংশ্লিষ্ট থানার তৎকালীন অফিসারদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। (ঘ) ভিক্টিম পরিবারের সদস্যদের চাকুরি ও আর্থিক ক্ষতিপূরন দিতে হবে। (ঙ) সংশ্লিষ্ট অফিসারদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচার কার্যক্রম শুরু করতে হবে এবং তাদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ করতে হবে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের পরিবারের সদস্যরা গত ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর বিচার বহির্ভূত ও কারা হেফাজতে হত্যার শিকার হয়েছে। হাসিনা সরকারের পোষ্য বাহিনী বিভিন্ন সময়ে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী জনতার প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে রিমান্ডের নামে অত্যাচার করে কারাগারেই খুন করেছে। এমন কি গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে অত্যচারের কারণে পরবর্তীতে গুরুতর অসুস্থ হলেও বিনা চিকিৎসায় তাদেরকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা আমাদের আপনজনদের হারিয়ে হারিয়ে এখন নিঃস্ব ও ভীতসন্ত্রস্ত। কারা হেফাজতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে হত্যার সঠিক বিচার চাই। ঢাকার লালবাগের একটি ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের ছেলে আনান হোসেন অশ্রুসজল চোখে বলেন, ‘‘আমার বাবাকে ধরে নিয়ে লালবাগ থানায় অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। নির্যাতনের কারণে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, চোখ খুলতে পারতেন না।’’ ’‘আনোয়ার হোসেন ভালো চিকিৎসা পায়নি’’ অভিযোগ করে ছেলে আনান হোসেন আরও বলেন, ‘‘বাবা ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাবা আর আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন না। আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।’’ পিরোজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবর শেখকে পুলিশ নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী হাফিজা আক্তার। তিনি বলেন, ‘‘তিনি বিএনপি করেন- এটাই তাঁর একমাত্র অপরাধ। যদি বিএনপি করা অপরাধ হয়, তাহলে দেশে কেন দুই দল? এক দল থাকাই তো দরকার।’’ SHARES সারা বাংলা বিষয়: