মুন্সীগঞ্জে আগাম আলু রোপনে ব্যস্ত কৃষক

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
 মো. মাসুম।।  আলু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত মুন্সীগঞ্জ জেলার কৃষকরা এখন আলু রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকরা এখন উঁচু জমিগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে আগাম আলু রোপন শুরু করছেন। পাশাপাশি নিচু ও সমতল জমিগুলো পরিস্কার করে হাল চাষ করার উপযোগী করে তোলছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জেলায় পুরোদমে আলু রোপন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা।সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উচু জমিগুলোতে কৃষকরা আগাম আলু রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। একের পর এক জমিতে আলু রোপনে কৃষকদের এই কর্ম ব্যস্ততা থাকবে আরো ১ মাস। প্রতি বছরের ন্যায় এবছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা এখন অবস্থান করছেন কৃষকদের বাড়ীতে। এসব শ্রমিকরা জমিতে থাকা খড়, শুকনো কচুরিপানা পরিস্কার, সার ছিটানো, হালচাষ এবং আলু রোপন সহ স্থানীয় কৃষকদের সবজি আবাদের জমিতে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত কাজ করবেন।স্থানীয় কৃষকরা জানান, জেলায় আলু সহ অন্যান্য সবজি আবাদে স্থানীয় শ্রমিক পাওয়া যায় না । পুরো জেলার কৃষি শ্রমিকদের চাহিদা পূরণ করেন রংপুর, গাইবান্দা, কুড়িগ্রাম, চাপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক। জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ভোর সকালে বসে শ্রম বিক্রির হাট। সেখান থেকে কৃষকরা মজুরি নির্ধারণ করে শ্রমিকদের নিয়ে আসেন কৃষি জমিতে। আবার অধিকাংশ কৃষক ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিক নিয়ে আসেন।সরেজমিনে সদর উপজেলার বজ্রযোগীনি, রামপাল, মহাকালি, মেঘনা নদী তীরবর্তী জাজিরা, চরমশুরা এলাকায় কৃষি জমিতে আগাম আলু রোপন করছেন কৃষকরা। জমিগুলোতে নারী ও পুরষ শ্রমিকরা আগাম আলু রোপন করছেন। পুরুষ শ্রমিকরা নাঙল দিয়ে কেইল করে দিচ্ছেন, নারী ও অন্যান্য শ্রমিকরা আলুর বীজ বপন করছে। একই সময়ে নাঙল দিয়ে বপন করা বীজ আলু ঢেকে দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি এলাকায় কৃষকরা তাদের জমিগুলো আলু রোপনের উপযোগী করে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।কৃষক মন্টু তালুকদার বলেন, এবছর ২০ একর জমিতে আলু রোপন করবো। ইতিমধ্যে ৩ একর জমিতে আগাম আলু রোপন সম্পন্ন করেছি। আমার মতো সকল কৃষকরা উঁচু জমিতে আগাম আলু রোপন করছেন। তিনি আরোও বলেন, এবছর সার, বীজ, কীটনাশকের দাম বেশি। বিশেষ করে বীজ আলুর দাম সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রায় তিনগুন দামে বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা নিরুপায় হয়ে বেশি দামে বীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এবছর আলু উৎপাদনে খরচ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে।আলু রোপনের শ্রমিকরা জানান, আলু রোপনের কাজে একজন পুরুষ শ্রমিসারাদিনে ৮শ টাকা এবং নারী শ্রমিকরা সারাদিন কাজ করে পাচ্ছেন ৫শ টাকা পারিশ্রমিক। নারী পুরুষ সমানতালে কাজ করলেও শ্রমের বাজারে পুরুষের তুলনায় নারীরা ঠকছেন বলে মন্তব্য করেন নারী শ্রমিকরা।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, এখন পর্যন্ত জেলায় ৮শ হেক্টর জমিতে আগাম আলু রোপন করেছে কৃষকরা। গত বছর জেলায় ৩৪ হাজার ৩শ ৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। এবছর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ হাজার ৬শ ৫৫ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ৩শ হেক্টর বেশি জমিতে আলু রোপন হবে। আগামী ২ সাপ্তাহের মধ্যে জেলায় পুরোদমে আলু রোপন শুরু হবে।