তিস্তার পানির ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশের আচরণ অপ্রতিবেশীমুলক- তারেক রহমান দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১২:১৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫ বিশাল মাহমুদ জিম ।। গত ৫০ বছর হলো ফারাক্কার অভিষাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়নি। এরমধ্যে তিস্তা নদী অভিষাপ্ত হয়ে দাড়িয়েছে। অথচ সেই তিস্তার পানির ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশ নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করে আমাদের সাথে অপ্রতিবেশীমুলক আচরণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে দুইদিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচীর সমাপনি দিনে লন্ডন থেকে ভিডিওকলে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তারেক রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশ পানির ন্যায্য হিস্যা না দেয়, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সায় না দেয়, তাহলে আমাদেরকেই বাঁচার পথ খুজে নিতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনে জাতিসংঘসহ আন্তজার্তিক সকল ফোরামে এই তিস্তার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। পাশাপাশি তিস্তার পাশাপাশি নদীগুলোকে খনন করতে এবং পানি সংরক্ষণাগার, জলাধার নির্মাণ করা হবে। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খাল কাটা প্রকল্প শুরু করা হবে। তিস্তা পাড়ের মানুষের তিস্তা নদী মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আন্দোলন বৃথা যাবে না। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে, তিস্তার সমাধান করা হবে। এজন্য বিএনপির প্রতি আপনাদের সমর্থন দরকার। তাই এখনকার শপথ ও শ্লোগান হলো জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও, জাগো বাহে দেশ বাঁচাও। তিনি আরো বলেন, ছাত্র-জনতার গণভুত্থানে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার প্রধান, একটা খুনি এই দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই স্বৈরাচার প্রধান একসময় বলেছে, ভারতকে যা দিয়েছি, ভারত তা সারাজীবন মনে রাখবে। ভারত আওয়ামীলীগকে মনে রাখছে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে মনে রাখেনি। ভারত বাংলাদেশকে কিছু দেয়নি। সারাবিশ্ব জুড়ে বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা সমাধান থাকে। সমস্যার নিরসন করে। এটাকে কুটনৈতিক নীতি বলে। অথচ ওই স্বৈরাচার সরকার ভারতকে খুশি রাখার জন্য নদী রক্ষা কমিশনকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলো। তিস্তার চুক্তি না হলেও স্বৈরাচার সরকার সকল রীতিনীতি ভঙ্গ করে ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সাথে ইতিপূর্বে করা অন্যায্য, একতরফাসহ বিভিন্ন চুক্তি পূণরায় বিবেচনা করা দরকার। অন্তবর্তিকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কোন হটকারী সিদ্ধান্তের কারনে যেন স্বৈরাচার ও খুনির দল পুনর্বাসন না হয়। এজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে অতিতের মতন। গণতান্ত্রিক দলগুলোর পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের কথা শুনলে অন্তবর্তিকালীন সরকারের কেউ কেউ বিচলিত হয়ে ওঠেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একেক উপদেষ্টা একেক সময়ের বক্তব্য খুনি ও মাফিয়া চক্রকে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরীর পথ সুগম করে দেয়। এজন্য প্রতিটি গণতান্ত্রিক দল এই সরকারকে রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বারবার আহবান জানিয়ে আসছে। তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এর আগে তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিস্তা রেল সেতু লালমনিরহাট পয়েন্ট থেকে গণপদযাত্রা শুরু হয় এবং তিস্তা সড়ক সেতু হয়ে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্ট গিয়ে শেষ হয়। উল্লেখ্য- সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান, পদযাত্রা জনতার সমাবেশসহ অন্যান্য কর্মসূচি। সোমবার বিকেলে রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু-সংলগ্ন পয়েন্টে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং অন্যান্য পয়েন্টে বিএনপিসহ মিত্র দলের নেতারা অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারীর ১১ স্থানে ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাও’ এই স্লোগানে কর্মসূচি পালিত হয়। SHARES সারা বাংলা বিষয়: