শ্যামনগরে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত। 

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৩৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
 সাতক্ষীরার উপকূলীয় জনপদ শ্যামনগরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৩শে ফেব্রুয়ারী রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মী সমাবেশে হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত হন। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় মহিলা কর্মী সম্মেলন, যেখানে হাজার হাজার নারী কর্মী অংশ নেন। তারা জামায়াতের আদর্শ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিজেদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে।উপজেলা আমীর মাওলানা আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ তাদের মনের কথা প্রকাশ করতে পারেনি। এমনকি তিন-চারজন একসাথে বসলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হতো। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনা, ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হয়। সরকার গঠনের পর তাদের প্রধান এজেন্ডা ছিল জামায়াতে ইসলামীর অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করা। শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাসহ ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে বিনা অপরাধে ফাঁসি ও বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও জামায়াত ও শিবিরের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, ইসলামী আন্দোলনকে নির্মূল করা সম্ভব নয়। আজকের এই বিশাল সমাবেশ তারই প্রমাণ।”তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা এই আন্দোলন নির্মূল করতে চেয়েছিলেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু আজ তাদের দলই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরে ঘুমন্ত আলেমদের ওপর নির্মম গুলি চালানো ও হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত, তাদের বিচার করতে হবে। ক্ষমতায় আসার পর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে ষড়যন্ত্র করে সেনাবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত খুনিরা আজও ধরা পড়েনি। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্যাহ, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম মুকুল, সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, মাওঃ আজিজুর রহমান, শেখ নুরুল হুদা, মাহবুবুল হক, প্রভাষক ওমর ফারুকসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। তারা সবাই জামায়াতের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও কর্মপন্থা তুলে ধরেন এবং সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান।বক্তারা শ্যামনগর উপজেলার উন্নয়নের রূপরেখা তুলে ধরেন এবং সরকারের কাছে দাবি জানান, “শ্যামনগর উপজেলার অবহেলিত মানুষদের উন্নয়নে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এই অঞ্চলকে মডেল উপজেলায় রূপান্তর করার জন্য জামায়াত নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।”নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, এই কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে দলের কর্মীরা নতুন উদ্দীপনায় কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবেন।