আগৈলঝাড়ায় অসাধু কর্মচারীদের শোকজ দেওয়ায় ইউএনওকে হয়রানি

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:৩৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২৫

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি।।

বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় ও নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত না হয়ে অফিস ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন তিনজন কর্মচারী। এনিয়ে ওই কর্মচারীদের মৌখিকভাবে সতর্ক করার পাশাপাশি শোকজ করেছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ওই কর্মচারীদের শোকজ করায় এবং স্থানীয় এক যুবদল নেতার অবৈধ ড্রেজারে অভিযান দেওয়ায় ইউএনওকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও অফিসের একাধিক কর্মচারী সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগষ্টের পর আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের অফিস সহকারী মতিউর রহমান ৬৮ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলো। এনিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে শোকজ করেন। এতে ইউএনও’র প্রতি ক্ষীপ্ত হয় মতিউর। একইভাবে অফিস সহায়ক আমীর আলী ও বিলকিস আক্তার অফিস ফাঁকির পাশাপাশি সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে উৎকোচ আদায় করে আসছিলো। বিষয়টি সেবাগ্রহিতারা ইউএনওকে জানানোর পর তাদেরকে শোকজ করা হয়। অফিসের কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অফিস সহকারী মতিউর রহমানের ক্ষমতার দাপটে অফিসের কর্মচারীরা থাকতো তটস্থ। ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অফিস থেকে পালিয়ে যায় ফ্যাসিষ্টের দোসর মতিউর। সেই মতিউর আবার স্থানীয় এক যুবদল নেতার ছত্রছায়ায় অফিসে দাপট দেখাতে শুরু করেছে। তারা আরও জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনপূর্বে আগৈলঝাড়া যুবদল নেতা হেমায়েত তালুকদারের অবৈধ ড্রেজারে অভিযান দিয়ে অর্ধলাখ টাকা জরিমানা করেন ইউএনও। এতে ইউএনও’র ওপর ক্ষীপ্ত হয় হেমায়েত। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউএনও’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে ওই তিন অফিস কর্মচারী এবং যুবদল নেতা হেমায়েত। তাঁরা স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতায় একটি ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে অসাধু কর্মচারীদের বক্তব্যধারণ করে ইউএনও’র বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালায়। এছাড়াও গতকাল হেমায়েতের নেতৃত্বে উপজেলা চত্বরে কতিপয় ব্যক্তিকে জড়ো করে ইউএনও’র বিরুদ্ধে অপমানমূলক স্লোগান দিতে দেখা যায়। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মতিউর রহমান নিজেকে বিএনপি সমর্থক দাবি করলেও অন্যকোন বিষয়ে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। যুবদল নেতা হেমায়েত তালুকদার অফিস কর্মচারীদের এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, আমার কোন ড্রেজার ব্যবসা নাই। শুনেছি স্থানীয়রা ইউএনও’র বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন জানান, অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি অফিস কর্মচারীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় এবং স্থানীয় এক অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী কর্তৃক ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের ঘটনায় অভিযান দেওয়ায় তারা সম্মিলিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, একজন কর্মচারী তার অফিস প্রধানের বিরুদ্ধে মিডিয়ায় এরকম বক্তব্য দিতে পারেনা। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।