গ্রীষ্মকালীন সময়ে নানান জাতের টমেটোর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় দিনাজপুরে

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

মোঃ আল আমিন।দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন টমেটো বাজারে উঠতে শুরু করেছে টমেটো। তাইতো স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু টমেটো উৎপাদনের পরে বাংলাদেশের অসংখ্য জেলায় সরবরাহ করতেছে। আরদ্দার ও কৃষক।

গত গেল সপ্তাহে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এবং কি রাত পর্যন্ত কেনাবেচা চলে টমেটো। দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নে এবং চিরিরবন্দর কারেন্ট হাট এ হাট বসে তবে দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউনিয়নের গাবুরারহাট টমেটোর জন্য বিখ্যাত । এখানে সারা দিনে অসংখ্য গাড়ি আসে, টমেটো লোড করতে যা বাংলাদেশের অসংখ্য জেলায় চলে যায়। এবং কি কৃষক নতুন জাতের টমেটো বাজারে উঠেছে তা আমরা সরজমিনে যায়ে প্রমাণ পাই।
তাইতো দিনাজপুরের গাবুরা বাজারে অসংখ্য জায়গা থেকে পাইকার এসে টমেটো নিয়ে যায়। আর এই মানসম্মত টমেটো উৎপাদন করতেছেন বিভিন্ন মানের কৃষকেরা। যা কিনা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করতেছে।

তাইতো গেল বছরের চেয়ে এ বছর টমেটোর উৎপাদন ভালো হওয়ায় পাঁচটি রা ভালো মূল্য পাচ্ছে এবং সেইসঙ্গে আরদ্দার ও পাইকার টমেটো বেচাকেনা করে ভালো মানের লাভবান হচ্ছেন।
আমরা লক্ষ্য করি গেল এক সপ্তাহে প্রায় পুতি দিলেই বিশ টারও বেশি ট্রাক লোড করে অর্থাৎ ১৯০ টন টমেটো ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। প্রতি কেজি টমেটো ১৫ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে অর্থাৎ ৬০০ টাকা মন আকারে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এ বছর তীব্র রোড এবং বেশি গরমের কারণে বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকার আসতেছে না টমেটো কিনতে। তবে বাড়ির থেকে পাইকাররা আসলে আরো বাড়তে পারে টমেটোর দাম।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ -পরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া জানান, এবছর জেলায় গ্রীষ্মকালীন টমেটোরয় আবাদ হয়েছে ৯৬০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছর ছিল প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে। তার আগের বছরে ছিল ৯৩৪ হেক্টর জমিতে । তারা প্রতি মণ টমেটো বর্তমানে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মন পর্যন্ত দাম পাচ্ছেন। এবার এই গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ ভালো হওয়ায় ফলন অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে এবং কৃষকরা এই টমেটো দীর্ঘ দিন ভালো রাখতে দিনাজপুর বীরগঞ্জ উপজেলায় ও চিরিরবন্দর উপজেলায় গড়ে তুলে মিনি হিমাগার।

কৃষি অফিস বিষয়টি জানিয়েছে, বিগত ১২/১৪ বছর ধরে দিনাজপুর সদর উপজেলা সহ চিরিরবন্দর, খানসামা, বীরগঞ্জ, বিরল ও ফুলবাড়ি উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ হয়েছে। টমেটোর বীজ বোনা শুরু হয়ে থাকে জানুয়ারী মাসের ১৪/১৫ তারিখের মধ্যে । ৬০ দিনের মধ্যেই টমেটো গাছে ফল আসে, আর ৩০ দিন পরেই টমেটো পাকতে শুরু করে। তবে জুন মাস পর্যন্ত এই টমেটো জমিতে থাকে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।

এই টমেটো শীতকালীন সবজি হলেও দিনাজপুর জেলায় গ্রীষ্মকালে আবাদ হয়ে থাকে। তাইতো গ্রীষ্মকালীন এই টমেটো চাষে রোগ-বালাই ও পোকার আক্রমণ হয় অনেক বেশি। । সামান্য আবহাওয়ার তারতম্য ঘটলে ফসল নষ্ট হতে পারে। এজন্য টমেটো চাষিদের সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। কৃষকেরা এই টমেটো সুন্দরভাবে আবাদ করে এক একরে আয় করতে পারে প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা।

আমরা জমিতে যায়ে ঘুরে জানতে পারি, দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের গাবুড়া বাজারে টমেটোর বিশাল হাট বসে থাকেন। এসময়ে চলছে এই টমেটোর হাট। প্রতিদিন এই হাট থেকে ৮০/১০০ ট্রাক টমেটো নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। প্রায় ২ থেকে তিন মাস পর্যন্ত এই টমেটোর হাট থাকে। আগামী জুন মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত চলবে হাট।

দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান জানান, হাটটি প্রতি বছর সরকারি ভাবে দরপত্রের মাধ্যমে ডেকে নেওয়া হয়। চলতি বছর ৮০লাখ টাকায় এই টমেটোর হাট ডেকে নেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের । সার ও বীজের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি কামলাদের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার টমেটো উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। আড়তদাররা।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারি-পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, দিনাজপুরের সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত এই গ্রীষ্মকালীন টমেটো অসময়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আসছে গত দুই যুগ ধরে। প্রতিবারই এর আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা উন্নত হয়েছে। ফলন বেশি হলেও দাম কম পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, সবেমাত্র মাঠ থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। দিন যতই যাবে, দামও বৃদ্ধি পাবে, এতে কৃষকরা লাভবান হবেন।

মিনি হিমাগার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে এই কৃষি কর্মকর্তা জানান, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ও বীরগঞ্জ উপজেলায় এই টমেটো সংরক্ষণের জন্য মিনি হিমাগার বাস্তবায়নের কাজ প্রায় শেষের দিকে এটি বাস্তবায়িত হলে জেলায় গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।