তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ঢাকা কলেজ এবং সিটি কলেজের মধ্যে সংঘর্ষে আহত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১২:১৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২৪ মোঃ মাহমুদুল হাসান ।।গত ২০ নভেম্বর উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক , ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজের ১৮৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরীর আগমনে সকাল সকাল থেকে শিক্ষক -শিক্ষার্থীদের র্যালি,জাতীয় পতকা উত্তোলন ,বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য শুরু হয় কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ।অনুষ্ঠান শেষের কিছুক্ষণ পর ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর তৌহিদ হাসান নামে এক শিক্ষার্থী সিটি কলেজের পাসে অবস্থিত উদ্ভাস কোচিং সেন্টার থেকে ক্লাস শেষ করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী বহনকারী বাস বিজয় -৭১ জন্য অপেক্ষা করে পথিমধ্যে হঠাৎ করে সিটি কলেজের একদল শিক্ষার্থী এসে তৌহিদ হোসেনকে মারধর শুরু করে ,তার কলেজ আইডি কার্ড নিয়ে যায় এবং কলেজে ড্রেস ছিড়ে ফেলে। ঘটনাস্থলে ঢাকা কলেজের পরিবহন বাস বিজয় ৭১পৌঁছে গেলে , গাড়ি থেকে শিক্ষার্থীরা নেমে তৌহিদকে বাঁচানোর চেষ্টা করে এরই মধ্যে সিটি কলেজ শিক্ষার্থীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। এরই মধ্যে সংঘর্ষের খবর দুই কলেজের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাবের দিকে অগ্রসর হয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়ায় । এতে করে ঘটনাস্থলে অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয় ।ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি তেমন ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হলে একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় দীর্ঘ সময় ধরে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে যৌথবাহিনীর ভূমিকায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয় কঠোরভাবে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসন টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়তে থাকে । ফলে শিক্ষার্থীরা বিছিন্নভাবে ক্যাম্পাস ও অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে তখন সবার মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয় ।কিছুক্ষণ পর আহতদের উদ্ধার করতে ঢাকা কলেজর শিক্ষার্থীরা বের হলে পুলিশ , সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঢাকা কলেজর ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের উপর টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, ছুড়ে এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আহত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঢাকা কলেজের ২ নং গেট ভেঙে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে প্রশাসনের ধাওয়ার মুখে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয় কলেজ ক্যাম্পাসে ধাওয়ার ফলে কলেজ অডিটোরিয়াম ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি দিকে সাউন্ড গ্রেন্ট নিক্ষেপ করলে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত একজন শিক্ষক উক্ত পরিস্থিতির কবলে পড়ে আহত হয়ে পড়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীর ওপর কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে এমন পরিস্থিতি তৈরির জন্য একপর্যায়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বাঘবিতন্ডিতায়জড়িয়ে পড়ে ,কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয় ।শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবরে ঢাকা কলেজে প্রশাসন এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়। পরবর্তীতে ,ঢাকা কলেজ এবং সিটি কলেজের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটে, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় সাংবাদিক সম্মেলন করেন।সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজের প্রিন্সিপালসহ শিক্ষক , শিক্ষার্থীরা এবং প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজ প্রশাসন বলেন, আজকের বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য ,আজকে আমাদের ১৮৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠান শেষে করে শিক্ষার্থীরা কলেজ বাসে দিয়ে সাইন্সল্যাব মোড়ে যাওয়ার পথে সিটি কলেজের সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর। পূর্বের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হয়ে বর্তমান সরকারের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যর্থ করাতেই আওয়ামী দোসরদের সহায়তায় এই সন্ত্রাসী হামলা চালায় ।যেখানে সিটি কলেজের দুর্বৃত্তরা (ছুরি, রড, প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে তাদের টিভি ফুটেজ দেখে আইনের আওতায় আনতে হবে। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ হতে নিম্নোক্ত দাবি তুলে ধরা হয়।১। দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি শিক্ষকরাও আহত হয়েছেন ।২। আমাদের স্থাপনা সেনাবাহিনী সরাসরি হামলা ও ভাংচুর করেছে। যা আমাদের জন্য লজ্জানজক। এ হামলার সঙ্গে জড়িত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।৩। বিশেষ করে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা যারা এই হামলার নির্দেশ দিয়েছে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। ৪। সকল বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত সিটি কলেজের কতিপয় সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীদের দোষী সাব্যস্ত করে পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে সিটি কলেজজকে স্থানান্তর করতে হবে।৫। সিটি কলেজের যেসকল শিক্ষকরা এই নিন্দনীয় ঘটনার সাথে সরাসরি নির্দেশ দাতা ও জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।৬। এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্বশরীরে ক্যাম্পাসে এসে পরিদর্শন করতে হবে।৭। এই হামলায় জড়িত সেনা ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে। ৮। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং শত সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন তাই পরিকল্পিতভাবে ঢাকা কলেজের ১৮৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হামলা করে বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেখানে সরাসরি সিটি কলেজ ও পুলিশ জড়িত ছিলো।৯। ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সকল দাবী দাওয়া মেনে নিয়ে ঢাকা কলেজে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।ঢাকা কলেজের একজন শিক্ষার্থী ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন সেনাবাহিনীর হাতে কি এইরকম ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ার দেয়া হয়েছে যে একজন নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে এভাবে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হবে।ধিক্কার_জানাই সেনাবাহিনী নামে এইরকম সন্ত্রাসী হামলা ন্যাক্কারজনক ঘটনার। এ বিষয়ে নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন ,তারা এ বিষয়টি পুরোপুরি অবগত ছিলোনা কিছু সেনাবাহিনী ও পুলিশের রিজাভ সদস্য তৎক্ষণাৎ এ ঘটনা সৃষ্টি করে।আমি এ ঘটনা পরিদর্শন করছি, আশা করি অতি দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: