বছরের প্রথম কাল বৈশাখী ঝড়ে লন্ড ভন্ড কুড়িগ্রাম

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

আসাদুজ্জামান।।

কুড়িগ্রামে প্রবল কাল বৈশাখী ঝড়ে জেলায় বিভিন্ন এলাকায় লণ্ডভণ্ড হয়েছে। এবছরের প্রথম কালবৈশাখী ঝড় ও দমকা হাওয়ায় অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়েছে, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে গেছে৷ ফলে জেলার নেসকো ও পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকরা গতকাল রাত থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও একরের পর একর ধান খেত হেলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজ রোববার সকাল থেকে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা, হলোখানা ও যাত্রাপুর ইউনিয়ন ঘুরে বৈশাখের ঝড়ের তাণ্ডব চিত্র দেখা গেছে। এর আগে গতকাল শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ ঝড়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে ১০ টায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপর দিয়ে হঠাৎ ধমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ায় সময় ঘরবাড়ি, গাছপালা, বিদ্যুৎ এর খুটি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কুড়িগ্রাম থেকে রংপুর সড়কের কয়েকটি জায়গায় এবং কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কের কয়েকটি জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ায় কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছ কেটে রাস্তা থেকে সড়িয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এছাড়াও সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক ঘড়বাড়ি দমকা হাওয়ায় চাল উড়ে যাওয়াসহ ভেঙে পড়েছে। কুড়িগ্রাম পৌর বাজার থেকে হাসপাতাল সড়কের বেশ কয়েকটি দোকানের টিন উড়ে গেছে। শহরের ধরোবন্ধু মোড় বস্তিতে ঘর ভেঙে পড়েছে। এছাড়াও যাত্রাপুর ইউনিয়ন, পাঁচগাছি ইউনিয়নসহ জেলার বেশ কিছু উপজেলায় ফসলি জমি বৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে।

সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক সামছুল আলম বলেন, বৈশাখী ঝড়ে আমাদের এখানে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে আধা পাকা ধান খেতের ধান হেলে জমিতে পড়ে গেছে। জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে সেখানে হেলে পড়া ধানের বেশ ক্ষতি হবে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যতিনেরহাট এলাকার বাসিন্দা হৃদয় কুমার রায় ঝড়ের পরে তার ফেসবুকে লিখেছেন- ‘এ যেন যুদ্ধ বিধস্ত এক কুড়িগ্রাম। শহরের রাস্তার যেদিকে তাকাই সেখানেই ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ, বিদ্যুতের খুটি ও টিনের চাল পড়ে আছে।’

হলোখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রেজা  বলেন, বছরের প্রথম দমকা হাওয়ার ঝড় এতো তীব্র হবে এটা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। হলোখানা ইউনিয়নের দুটি বিদ্যালয়ের টিনের চাল উড়ে গেছে। ইউনিয়নের আরাজি পলাশবাড়ী, টাপুর চর, জালফারা এলাকার আনুমানিক ১৫ হেক্টর ধান, ১৮ হেক্টির ভূট্টা, ১ হেক্টর কলার বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে জেলার বেশ কিছু উপজেলায় কৃষি ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঠিক কত পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি সেটির হিসাবে এখনো পাওয়া সম্ভব হয়নি। প্রাথমিকভাবে ১১৮ হেক্টর ধান খেত, ৯২ হেক্টর ভূট্টা, ৫১ হেক্টর সবজি এবং ১৬ হেক্টর পাট খেত হেলে পরার তথ্য পাওয়া গেছে।