ডোমারে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিনের গণসংবর্ধনা ও জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত। দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৪:১৩ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২৫ আবু সাইদ।। দীর্ঘ ১৮ বছর পর দেশে ফিরে নিজ জন্মভূমিতে পদার্পন ও কারামুক্তি উপলক্ষে নীলফামারীর ডোমারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাত ভাই উন্নয়ন অগ্রগতি সম্প্রীতির দূত প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের গণসংবর্ধনা ও জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ১৭ই মে বিকেল সাড়ে পাঁচ টায় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের জনসমাগমের মধ্যে দিয়ে এই গণসংবর্ধনা ও জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত গণসংবর্ধনা ও জনসমাবেশকে ঘিরে মাঠের পুরো এলাকা জুড়ে দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো, পুরো মাঠটি জনসমাগমে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ১নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম কালুর সভাপতিত্বে গণসংবর্ধনা ও জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংবর্ধিত প্রধান অতিথি নীলফামারী-০১ ডোমার-ডিমলা আসনের সাবেক সংসদ ও নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, ডোমার পৌর বিএনপির সভাপতি আনিছুর রহমান আনু প্রমুখ। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ বিন আমিন সুমনের উপস্থাপনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবু সাদেক হোসেন চৌধুরী লুলু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাদাত চৌধুরী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রায়হানুল হক প্রধান ইউসুফ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে সাম্য কেড়ে নিয়েছে, মানবিক মর্যাদা ও অধিকার হরণ করেছে। এছাড়া দেশের মানুষের সামাজিক সুবিচার থেকে বঞ্চিত করেছে। বিএনপি সহ সকল বিরোধী দলের দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলনে শতশত প্রাণের বিনিময়ে সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিদায় দিয়েছে জনগণ। আমাদের অনেক নেতা-কর্মীকে গুম, খুন, হত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন, ২৪’র গণঅভ্যুত্থানে এদেশের নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা সরকারি বাহিনীর আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে অকাতরে জীবন দিয়েছে। তাদের আত্মাহুতির বিনিময়ে আজ বাকস্বাধীনতা এসেছে। এদেশে ১৯৭২-৭৫ একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। সেসময় বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা হয়। তবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেন। তিনি সকল দলের সমানভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর ১৯৮১ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া ডোমার সহ দেশের প্রতিটি উপজেলায় ঘুরে ঘুরে বিএনপিকে সুসংগঠিত করেছেন। তিনি নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিতে গিয়েছে, কিন্তু কখনো আপোষ করেননি। তিনি ২০১৪, ২০১৮ কিংবা ২০২৪-এ আপোষ করতে পারতেন, কিন্তু এদেশের জনগণের কথা ভেবে তিনি কখনোই আপোষ করেননি। তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী সবসময় দ্বিচারিতা করে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর দেশবিরোধী আচরণের কথা সবাই জানে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে থাকলেও ১৯৮৬ সালে তারা আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচনে গিয়েছিল। এদেশের জনগণের সাথে তারা বারে বারে প্রতারণা করেছে। আজকে বিএনপির নামে বদনাম রটছে। আমাদের সাবধান হতে হবে। তিনি বলেন, আমি দেশে আসার পর প্রকৌশলী মহলের সাথে কথা বলেছি। তারা আমার নীলফামারী জেলায় কাজ করতে আগ্রহী। ডোমার ও ডিমলা উপজেলার অসম্পূর্ণ কাজগুলো অতিসত্বর আমরা শুরু করবো। এই এলাকার তথ্যপ্রযুক্তি এক্সপার্টদের নিয়ে কাজ করবো। আমরা শীঘ্রই ডোমারে একটি টেকনিক্যাল কলেজ নির্মাণ করতে চাই। মানবসম্পদ উন্নয়ন করতে চাই। আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য- ডোমার ও ডিমলা উপজেলাকে নিরক্ষর মুক্ত করা। ডোমারে এক লাখ ২১ হাজার পরিবার রয়েছে। প্রত্যেক পরিবার থেকে অন্তত একজন যেন স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে পারে, আমেয়া সেজন্য কাজ করবো। বেআইনি কাজ করা যাবেনা। মাদকমুক্ত এলাকা গড়ত্ব হবে। এই এলাকার হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- আমরা সবাই ভাই-ভাই। পরিশেষে তিনি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে মাত্র চারবছর দেশ পরিচালনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। সেসময় দেশের কল্যাণে করা তার সকল কাজের জন্য তিনি মরে গিয়েও অমর হয়ে রয়েছেন। এরপর বেগম খালেদা জিয়া দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন। কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে কখনো দেশ ছেড়ে যাননি। তার পুত্র তারেক রহমান নির্বাসনে গেলেও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিলই। তিনি ভাইকে হারিয়েছেন, মাকে জেলে যেতে হয়েছিল, তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। তার নেতৃত্বে বিএনপি সুসংগঠিত হয়েছে। তিনি ২০২৩ এর জুনেই রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কথা বলেছেন। এর আগে, সকালে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করলে সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির পথসভা শেষে নীলফামারী জেলা বিএনপির আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে গণসংবর্ধনা ও জনসমাবেশে যোগ দেন তিনি। SHARES সারা বাংলা বিষয়: