জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন আমির মুকুলের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:৪২ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২৫
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ৬ নং আমলা ইউনিয়নের বুরাপাড়া গ্রামের জিকে ক্যানেলের সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ জামায়াতে ইসলামীর আমলা ইউনিয়ন আমির নাসিম রেজা মুকুলের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নাসিম রেজা মুকুল কে অভিযোগের বিষয় মুঠো ফোনে কল দিলে নিজেই গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন। সেই কল রেকর্ড ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
 নাসিম রেজা মুকুল তিন যায়গায় তিন ধরনের বক্তব্য প্রদান করেন। কোথাও বলেন বন কর্মকর্তার অনুমতি দিয়েছেন, আমার কাছে কাগজ আছে আবার আমলা বাজারে ফার্মেসীর মধ্যে বলেন, জামায়াতের কোন ব্যাক্তি খারাপ কোন কাজ করতে পারেন না। এবং এই গাছ কাটার সাথে আমি জড়িত নয়। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবং তিনি বলেন আমি এই গাছ কাটার সাথে জড়িত নয়। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আপনারা আমার হাত কেটে নিবেন। এ সময় নিজেদের দলের কর্মীদের দিয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
 এ ঘটনার দশ দিন পার হলেও এখনো কোনো প্রকার মামলা হয়নি, যা নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড় ,এবং  জনমনে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকার সাধারণ জনগণের দাবি তিনি তো নিজেই, ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডিংয়ে নাসিম রেজা মুকুলকে বলতে শোনা যায়, “আমার কাছে অনুমতির কাগজ আছে।” অথচ তিনি তা এখন পর্যন্ত দেখাতে পারেননি এবং সম্প্রতি তিনি বলছেন, “আমি গাছ কাটিনাই।” এ নিয়ে তার বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। সাধারণ জনগণ বলেন তার মতো একজন শিক্ষিত ও একটি ইসলামি দলের ইউনিয়ন আমির হয়ে এধরনের মিথ্যা কথা বলেন, তাহলে আমরা সমাজে কাকে বিশ্বাস করবো।
একইসঙ্গে ওসি (তদন্ত) আব্দুল আজিজ কে কল দিলে তিনি বলেন, বন কর্মকর্তা কোন কিছু বলতে পারে না। তবে আমাদের নিকট গাছ কাটার অভিযোগ আসার সাথে সাথে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
বন কর্মকর্তার জুয়েল আহমেদের সঙ্গে  কথোপকথনের অডিও রেকর্ডেও স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে— “আমরা কাউকে গাছ কাটতে অনুমতি দেই নাই। এবং বর্তমানে গাছ কাটার কোন প্রকার অনুমতি নাই। অনুমতি যদি কখনো দেন তাহলে বিভাগীয় বোন কর্মকর্তা টেন্ডারের মাধ্যমে অনুমতি দিয়ে থাকেন। এবং টেন্ডারের পূর্বে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয় বন বিভাগ কে। এবং এলাকায় মাইকিং করে তারপর গাছ কাটার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন অবৈধভাবে গাছ গুলো কাটা হচ্ছিল, তাই সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।”ঘটনার দিনই বন বিভাগের অনুরোধে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ গুলো জব্দ করে এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বন বিভাগ যেভাবে নির্দেশ দেবে, তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এত কিছু ঘটার পরও বন বিভাগ মামলা না করে নিরব ভূমিকা পালন করছে। এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “স্বীকারোক্তি, কল রেকর্ড, জব্দকৃত গাছ—সবকিছু থাকার পরও মামলা না হলে এটা পরিষ্কার যে, প্রভাবশালীদের রক্ষায় বন কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্বে গাফিলতি করছেন।”এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, “ঘটনাটি তদন্তাধীন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।” তবে কবে মামলা হবে কিংবা আদৌ হবে কি না—তা নিয়ে তিনি কিছু বলেননি। অথচ ওই বিষয়টা নিয়ে নাসিম রেজা মুকুল ও তার অনুসারীরা বিষয়টি মিথ্যা বানোয়াট বলে প্রচার চালাচ্ছেন। এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠন, সুশীল সমাজ ও সাধারণ জনগণ দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত,করে  দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। এবং বন বিভাগ কাদের সার্থে নিরব ভূমিকা পালন করছেন এ বিষয় সাধারণ জনগণ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।