তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১৪৯০ মিটার মওলানা ভাসানী সেতুর ফলক ও ম্যুরাল উন্মোচন দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ২:১৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৫ গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার ও কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলা সদরকে সংযুক্তকারী তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ মাওলানা ভাসানী সেতুর ফলক ও ম্যুরাল উন্মোচন করে সেতুটির শুভ উদ্বোধন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।বুধবার দুপুরে সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত উদ্বোধনোত্তর মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ মিয়া, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহামদ, গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাসসহ এলজিইডি ও জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও অংশ নেন।এ সময় বক্তারা জানান, দরিদ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত তিস্তা নদীবেষ্টিত এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল একটি স্থায়ী সেতু। সেতুটি চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অগ্রগতি ঘটবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন, শিক্ষা, চিকিৎসা ও জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে নদীর দুই তীরের মানুষের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে এবং আনন্দে মেতে ওঠেন গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের সাধারণ মানুষ।১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ এই সেতু এলজিইডি’র একটি বৃহৎ প্রকল্প। সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন সেতুটি নির্মাণ করে। প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ, মূল সেতু, সংযোগ সড়ক, উন্নত লাইটিং ব্যবস্থা, নদী শাসনসহ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯৮৫ কোটি টাকা। সেতুটি নির্মাণে ২৯০টি পাইল, ১৫৫টি গার্ডার, ৩০টি পিলার এবং ২৮টি স্প্যান বসানো হয়েছে। উভয় পাশে দেড় কিলোমিটার করে নদী শাসনের কাজ করা হয়েছে। ৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কে ৫৮টি ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হলেও নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয় এবং সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে চলতি মাসে সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।সেতুটি চালু হওয়ায় গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে সড়কপথে যাতায়াতের সময় প্রায় ৪ ঘণ্টা কমে যাবে। একইসঙ্গে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব কমবে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। এতে দুই পাড়ের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও স্থানীয় অর্থনৈতিক সক্ষমতার বড় পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। বিশেষ করে কৃষিকাজে উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাত করা যাবে এবং ন্যায্য মূল্য পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। শিক্ষার হার বৃদ্ধি ও সামগ্রিক উন্নয়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলটি সামনে আরও এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। মোঃ নুরুন্নবী মিয়া ।। SHARES সারা বাংলা বিষয়: