ওসমানীনগরের বিভিন্ন বাজারে দলবেঁধে কুকুরের উপদ্রব, জনমনে চরম আতঙ্ক

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২৫
শরীফ আহমদ চৌধুরী ।।
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও জনবহুল এলাকায় সম্প্রতি হঠাৎ করেই কুকুরের উপদ্রব বাড়ছে। বিশেষ করে গোয়ালা বাজার, তাজপুর, দয়ামীর, নাজিরবাজার, কলারাই, শেরপুর, সাদীপুর, বুরুঙ্গা বাজার, কুরুয়া বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে দলবদ্ধ কুকুরের চলাফেরা ও আগ্রাসী আচরণে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব বাজার এলাকায় ১০-১৫টি করে কুকুর দলবেঁধে ঘোরাফেরা করে। অনেক সময় তারা দোকানপাট, হাঁটাবাজার, এমনকি খাবারের হোটেল-রেস্তোরাঁর সামনেও অবস্থান নেয়। ফলে দোকানি ও ভোক্তারা বিড়ম্বনায় পড়েন। মাঝে মাঝেই এসব কুকুর রাস্তায় ছুটোছুটি করে গাড়ির সামনে চলে আসে, অনেক সময় পথচারীদের তাড়া দেয়, এমনকি কামড়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, বিগত কয়েক বছরে কোনো ধরনের কুকুর নিধন বা টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। ফলে এই কুকুরগুলোর মধ্যে কিছু অসুস্থ ও উন্মত্ত আচরণ প্রদর্শন করছে। এতে করে জলাতঙ্ক (রেবিস) রোগের ঝুঁকিও বাড়ছে।
দয়ামীর বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, “রাতে দোকান বন্ধ করে যেতে অনেক সময় ভয় লাগে। কুকুরগুলো দলে ঘুরে বেড়ায়, হঠাৎ হঠাৎ ঘেউ ঘেউ করে ছুটে আসে। গ্রাহকরাও অস্বস্তি অনুভব করেন।”
স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই এই কুকুরের ভয়ে আতঙ্কে থাকে। অভিভাবকরা বলেন, “আমার সন্তানকে একা বাজার বা রাস্তা দিয়ে পাঠাতে ভয় হয়। কুকুর তাড়া করলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুত কুকুর নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জীবাণুনাশক স্প্রে, ভ্যাকসিন প্রদান ও প্রয়োজন হলে কুকুর পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদিন জানান, “এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জননিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।”
বাজারে কুকুরের এমন উপদ্রব শুধু জনদুর্ভোগই বাড়াচ্ছে না, স্বাস্থ্য ঝুঁকিও তৈরি করছে। এখনই এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা বা প্রাণহানির আশঙ্কা অস্বীকার করা যায় না।