প্রতিবন্ধী বোনেদের টাকা না দিয়ে শরীয়তপুরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলেন চাচা দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৫:৩৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২৪ রাকিব হোসাইন//শরীয়তপুরের ডামুড্যাতে দুই প্রতিবন্ধী বোনের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে চাচা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে।সেই টাকা চাইতে গেলে তাদের হুমকিধামকি দেয়ার পাশাপাশি দায়ের করা হয়েছে একটি মামলাও। আর টাকা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।এদিকে টাকা ফেরত পাওয়ার পাশাপাশি মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ডামুড্যা পৌরসভার দক্ষিণ ডামুড্যা এলাকার সরকারি কর্মচারী শামসুদ্দিন করাতী তার স্ত্রী রিজিয়া খাতুন আর ৬ মেয়ে সন্তান রেখে মারা যান ২০ বছর আগে। তার ৬ টি সন্তানের মধ্যে ৫টি সন্তানই শারীরিক প্রতিবন্ধী। দুই মেয়ে রওশন আরা আর নাসিমা বেগম অসুস্থ হয়ে মারা যায় বেশ কয়েকবছর আগে। বাকি ৪ সন্তানের মধ্যে শাহিদা, রাশিদা ও হাসিনা শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও সুস্থ এবং স্বাভাবিক রয়েছেন ছোট মেয়ে সালমা।বাবা শামসুদ্দিন করাতী মারা যাওয়ার আগে তার সকল সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান ৬ মেয়েকে। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি শামসুদ্দিন করাতীর চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলী করাতী।সম্পত্তির একটি অংশ বিক্রি করা হলে সেই টাকা প্রতিবন্ধী বোনদের নামে ব্যাংকে রাখার নাম করে নিয়ে যায় তিনি। পরবর্তীতে সেই টাকা চাওয়া হলে ফেরত দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এমনকি তারা তাদের ব্যাংকের চেক বই চাইলে তাদের ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। চাচা মোহাম্মদ আলীর ব্যাংকে টাকা জমা রাখার পুরনো একটি রশিদ বই। ২ মাস আগে মোহাম্মদ আলী মালোশিয়া চলে গেলে ওই ৪ বোনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন চাচি কাকন বেগম।ভুক্তভোগী শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা বলেন, মোহাম্মদ আলী ব্যাংকে টাকা রাখার কথা বলে এখন আমাকে টাকা দেয় না। আমার চেক বইটাও নিয়ে গেছে। টাকা চাইলে বলে কিসের টাকা। আপনারা আমার টাকাটা একটু উঠাইয়া দেন।ছোট বোন সালমা বলেন, বাবা মারা যাওয়ার আগে আমাদের ৬ বোনের নামে সম্পত্তি লিখে দিয়ে যায়। আমার ৬ বোনের মধ্যে ৫ জন প্রতিবন্ধী। দুইজন মারা গিয়েছে। আমাদের এই সম্পত্তি নিয়ে চাচায় মামলা দিয়েছে। আমি এখন এই প্রতিবন্ধী ৩ বোনকে নিয়ে কীভাবে আদালতে যাবো। আমরা নিজেরাই খেতে পারিনা। এখন কোর্ট চালাবো কীভাবে। আমরা সরকারের কাছে সাহায্য চাই। যাতে এই মামলা উঠিয়ে দিয়ে সুষ্ঠু একটা সমাধান করে দেয়।আরেক শারীরিক প্রতিবন্ধী রাশিদা বলেন, চাচার কাছে টাকা চাইলে আমাদের অত্যাচার করে, বকা দেয়। আমরা অনেক নিরুপায়। আমাদের সাহায্য করার মতো কেউ নাই। আমরা আমাদের টাকাগুলা ফেরত চায়এদিকে একটি জমি সংক্রান্ত মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করলেও টাকার বিষয়ে কিছু জানেন বলে দাবী করেছেন মোহাম্মদ আলী করাতীর স্ত্রী কাকন বেগম। তিনি বলেন, আমার স্বামী কয়েক মাস আগে বিদেশ চলে গেছে। এরপর ওরা বোনেরা আমাদের চৌহদ্দি দেয়া সম্পত্তি বিক্রি করতে গিয়েছে। তাই আমি মামলা করেছি। তবে ব্যাংকে টাকা রাখার বিষয়ে আমি জানিনা। সেটা আপনারা (সাংবাদিকরা) ম্যানেজারকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন।এদিকে প্রতিবন্ধী বোনেদের সাথে এমন আচরণ অমানবিক বলছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। বিষয়টি নিয়ে ডামুড্যা পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রাজা ছৈয়াল বলেন, প্রতিবন্ধী পরিবারটির পাশে আমরা সব সময় ছিলাম।তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদ আলীর পরিবার মামলা করেছে বিষয়টি জানা ছিলো না। তাছাড়া জানতে পারলাম প্রতিবন্ধী বোনদের টাকা ব্যাংকে রাখার নামে ফেরত দিচ্ছে না।বিষয়টি আসলেই অমানবিক। আমরা স্থানীয়ভাবে উভয়পক্ষকে ডেকে মিমাংসা করার চেষ্টা করবো। SHARES সারা বাংলা বিষয়: