সড়ক মেরামতের দাবিতে পথে নামলেন স্থানীয়রা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:২০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৪

এস.এম আবু রায়হান।। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় কুলাউড়া-জনতাবাজার-রাঙ্গিছড়া এলজিইডি সড়ক মেরামত করে ভাঙ্গন কবল থেকে রক্ষার দাবিতে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।সোমবার ৪ নভেম্বর দুপুরে সদর ইউনিয়নের নাজিরের চক গ্রামের দিঘীরপাড় এলাকায় মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামতের কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ইউনিয়ন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট অফিস ঘেরাও করার ঘোষণা দেন।মানববন্ধনে নাজিরের চক গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী শাহ আলম শামীমের পরিচালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ও সমাজসেবক জুবের আহমদ খান, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সাইফুর রহমান, ব্যবসায়ী বিজন চন্দ্র দাস, কুলাউড়া-রাঙ্গিছড়া সিএনজি মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি রণজিৎ মালাকার, কুলাউড়া-গাজীপুর-রাঙ্গিছড়া সিএনজি লাইন সমিতির ম্যানেজার বেলাল মিয়া, জনতাবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আজির মিয়া, ব্যবসায়ী অজুদ মিয়া, উজ্জ্বল মিয়া প্রমুখ। এসময় মানববন্ধনে স্থানীয় এলাকার লোকজন, সিএনজি চালক ও নাজিরের চক মাদ্রাসার প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের নাজিরের চক গ্রামের দিঘীরপাড় এলাকায় প্রায় ১৫০ ফুটের অধিক সড়কে ভাঙ্গার কারণে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে। চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন। আমরা শুনেছি, সড়কের এই ভাঙ্গা অংশটি মেরামত করার জন্য পরিষদ থেকে দেড় লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সড়কের ভাঙ্গা অংশটি পরিদর্শন করে দ্রুত মেরামত করার আশ^াস দিয়েছিলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান মোসাদ্দিক আহমদ নোমানসহ পরিষদের সদস্যরা এলজিইডি সড়কে কোন উন্নয়ন কাজ করা যাবেনা এমন অজুহাত দেখিয়ে প্রকল্পের টাকা দিয়ে অন্যত্র কাজ করেন। অথচ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই রাস্তায় চলতে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই সড়কটি দিয়েই সদর ইউনিয়নের করেরগ্রাম, নাজিরের চক, শংকরপুর, বালিশ্রী, প্রতাবী, গুতগুতি, লক্ষ্মীপুর ও পার্শ্ববর্তী কর্মধা ইউনিয়নের কালিটি চা-বাগান, রাঙ্গিছড়া চা-বাগানসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার লোকজনকে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। এসব এলাকার শিক্ষার্থীরাও এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে।মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, সংস্কারের অভাবে কুলাউড়া-জনতাবাজার-রাঙ্গিছড়া এলজিইডি সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সাত কিলোমিটার সড়কটি ইউনিয়নের মধ্যখান দিয়ে গেছে। গত তিন বছর ধরে রাস্তার বিভিন্ন অংশের পিচ ঢালাই ও ইট সরে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কটি ২০১৬-১৭ সালে সর্বশেষ সংস্কার করা হয়। এই সড়কের নাজিরের চক দিঘীরপাড় এলাকায় প্রায় দেড়শত ফুট জায়গা ভেঙে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। রোগী নিয়ে সময়মত হাসপাতালে যাওয়া যায় না। দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা এখন সকলের প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে।কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান বলেন, সড়কের ওই ভাঙ্গা অংশের জন্য জনগণ দুর্ভোগে পড়েছেন এটা সত্য। ওই সড়কটি মেরামত জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় একাধিকবার আলোচনা করেছি। সাবেক এমপি, দুইজন উপজেলা চেয়ারম্যান, তিনজন ইউএনওকে ভাঙ্গা রাস্তাটি মেরামত করার জন্য একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু সরকারিভাবে কোন বরাদ্দ না থাকায় কাজটি করা সম্ভব হয়নি। আগামী এডিবি প্রকল্প থেকে কাজটি গুরুত্ব সহকারে করা হবে।এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, আরসিআইপি প্রজেক্টের আওতায় ওই সড়কসহ উপজেলার অন্য এলাকায় ২০ কিলোমিটার সড়কের মেরামত কাজের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হলে সড়কটি স্থায়ীভাবে কাজ করা হবে। তবে স্থানীয়ভাবে ইউনিয়ন পরিষদ মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ভাঙ্গা স্থানটি অস্থায়ীভাবে মেরামত করতে পারতো।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন বলেন, আপাতত সরকারি কোন বরাদ্দ নেই। তবে ওই সড়কের ভাঙ্গা স্থানটি মেরামত করার জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছিল জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে স্থানীয়ভাবে কাজটি করতে। জনস্বার্থে কাজটি করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।