বদলগাছীতে নিয়মনীতি না মেনে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের অভিযোগ মুনাফার টাকা লুটপাট দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪ সৈকত সোবাহান ।। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিপত্রের নির্দেশনা না মেনে নওগাঁর বদলগাছীতেখাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ এবং বিভিন্ন খরচের নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির লাভের টাকা লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটিসহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়- উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সহায়তায়, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের যোগসাজসে উপজেলার আটটি ইউপি সচিবদের (ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে) ডিলার সাজিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রি এবং লাভের টাকা নিজেদের পকেটে রেখেছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সচিবরা বলছেন উপকারভোগীদের কাছে চাল বিক্রি করতে বিভিন্ন খাতে টাকা খরচ হয়েছে এবং চাল বিক্রির লাভের টাকা থেকে খরচ বাদ দিয়ে বাঁকী টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন “ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির কথা থাকলেও” তা না করে ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কে ডিলার বানিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রি করছে। বিক্রির লাভের টাকা কার পকেটে যাবে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী ডিলার নিয়োগ করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির কথা। কিন্তু তা না করে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সদস্য সচিব উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইউনিয়ন পরিষদের সচিবদের ডিলার বানিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির লাভের টাকা হরিলুটের পায়তারা করছে। ইউনিয়ন পরিষদে জনপ্রতিনিধিসহ সবাই বেতনভূক্ত কর্মচারি। চাল বিক্রির লাভের টাকা সচিবদের পকেটে কেন। ইউনিয়ন পরিষদের যেকোন কাজ করার দাায়িত্ব তাদেরই।সুতরাং চাল বিক্রির পুরো লাভের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করার আহবান জানান তারা।উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ই আগষ্ট উপজেলার সকল পুরাতন খাদ্যবান্ধব ডিলার বাতিল করে এবং ১২ই নভেম্বর উপজেলার নতুন ডিলারের তালিকা প্রকাশ করে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটি। আবারও ১৪ই নভেম্বর অভিযোগ হলে ১৮ই নভেম্বর নতুন ডিলার স্থগিত করে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটি।এর কারনে উপজেলার ৭ হাজার ৭ শত ৫৫ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগী দুই মাস ধরে চাল না পেয়ে পরে চরম বেকায়দায় পড়ে। উপকারভোগীদের কথা চিন্তা করে গত ১৯শে নভেম্বর ( মঙ্গলবার) নিয়মনীতি মেনে নওগাঁ সদর ও বদলগাছী উপজেলার চাল বিতরণের ব্যপারে খাদ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বরাবর একটি পরিপত্র জারি করে খাদ্য মন্ত্রণালয়।এমন নির্দেশনা পেয়ে জেলা খাদ্য অফিসের নির্দেশনায় উপজেলা কমিটির সহায়তায়ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবং ইউনিয়ন পরিষদের সচিবগণ ১৩ টাকা কেজি ধরে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে চাল উত্তোলন করে চাল বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।গত ২৬শে নভেম্বর মঙ্গলবার থেকে ২ ডিসেম্বর সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আটটি ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, সচিব, এবং গ্রাম পুলিশ মিলে মোট ৭ হজার ৭শত ৫৫ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগী পরিবারের কাছে কেজি প্রতি ২ টাকা বেশী লাভে একসাথে অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাসের চাল বিক্রি করছেন। এতে লাভ হয় ৯ লক্ষ ৩০ হাজার ৬ শত ৩০ টকা। তবে চাল বিক্রির পুরো লাভের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না করে ইউপি সচিবরা নিজেদের পকেটে রেখেছে। ফলে এই টাকা হরিলুট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।উপজেলার মেহরাব সাঈদ, নাহিদআখতার, আঞ্জুমান আরা সহ একাধিক ইউপির সচিবগণ জানান, আমাদেরকে চাল পৌঁছে দিয়েছে ও চাল বিতরণ করতে বলা হয়েছে আমরা করেছি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কত টাকা ট্রেজারির মাধ্যমে জমা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনারা বলেন, ব্যাংকে কে টাকা জমা করেছে আমি বলতে পারবো না। তবে ইউএনও স্যার এবং উপজেলা ফুড অফিসের নির্দেশনায় চাল বিতরন করা হচ্ছে। চাল বিক্রির লাভের টাকা কোখায় যাবে তা আমি জানি না।এ ব্যপারে আমরা জানি না। আমাদের নামে উপজেলা প্রশাসন টাকা জমা করেছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় চাল বিতরণ করছি।খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণের ব্যপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোসা. সাবরিনা মোস্তারী বলেন,জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী চাল বিক্রি করছেন সচিবরা। লাভের ৭০ শতাংশ টাকা রেখে বাঁকী টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে। খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণ ও লাভের টাকার ব্যপারে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, এ বিষয়ে জেলা এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকতার্রা বলতে পারবেন। তবে আমার জানা মতে ৭০ শতাংশ টাকা খরচ হবে। ৩০ শতাংশ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে।খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণ ও লাভের টাকার ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন মুঠোফোনে বলেন- যারা চাল বিক্রি করছেন তারাই লাভের টাকা পাবেন। অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ লাভের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে। আর ৭০ শতাংশ টাকা যারা চাল বিক্রি করছেন তারা খরচ করবেন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এরকম কোন আদেশ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান। SHARES সারা বাংলা বিষয়: