ওসমানীনগরে ৫ শত বছরের প্রাচীন জামে মসজিদ ও মাজারে যাতায়াতের রাস্তা প্রতিবন্ধকতা অপসারণ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪:১৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
শরীফ আহমদ চৌধুরী ।। সিলেটের ওসমানীনগরের তাজপুর ইউনিয়নের লাল কৈলাশ (মোকামপাড়া) গ্রামের শাহ মাদার (রহ:) জামে মসজিদের যাতায়াতের সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে ২৫ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে উভয় পক্ষের সম্মতিতে মসজিদের প্রধান ফটকের বেড়াটি অপসারন করা হয়। এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর মসজিদের যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতার কথা উল্যেখ করে সিলেট জেলা প্রশাসকের কাছে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা গ্রহনে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিলে তিন সদস্য একটি কমিটি গঠন করে উপজেলা প্রশাসন।কমিটির সদস্যরা হলেন,উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সৈয়দ দিদারুল ইসলাম কায়েস ও তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবির আহমদ। কমিটির সদস্যরা বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে নেয়ার আহবান জানালে উভয় পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে মসজিদে যাতায়াতে স্থায়ী রাস্তা নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।স্থানীয় ও লিখত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাহ মাদার (রহ:) জামে মসজিদ, শাহ- মাদার (রহ:) মাজার ও কবরস্থান রয়েছে। উমরপুর ইউনিয়নের মাঠিহানী গ্রামের আলী আহমদ, আলী হোসেন, আলী আকবর ও আলী নূর এর মসজিদের যাতায়াতের প্রধান ফটকে বেড়া দিয়ে সম্প্রতি মসজিদ-মাজার ও মক্তবে যাতায়াতের রাস্তা জুরপূর্বক বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠে। বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় সীমানা প্রাচির টপকে দ্বায়িত্বরত ইমাম মসজিদে আজান দিলেও গ্রামের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নামাজ আদায়, শিশুদের মক্তবে যাতায়াত ও করবস্থানে লাশ দাফন করতে পারছিলেন না। শাহ মাদার (রহ:) মাজারের ভক্তগনও মাজারে প্রবেশ করতে না পারায় ফিরে যেতে হয়। মেসাফির খানার ঘর নালিশা ভূমি হওয়ায় এই বিষয়ে আদালতে একটি স্বত্ব মামলা চলমান। মামলা নং ১২৫/২০২১ইং। মামলাটি আমলে নিয়ে চলতি বছর ০৯ ফেব্রুয়ারী স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত। আদেশে আদালত নালিশা ভূমিতে মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন পক্ষ কর্তৃক মসজিদ, মাজার ব্যবহার অথবা কবরস্থানে লাশ দাফনের ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা প্রযোজ্য হবে না বলেও উল্যেখ করেন। সম্প্রতি মসজিদের প্রধান ফটকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে গ্রামবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসনে ১১০জন স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।বুধবার দুপুরে মসজিদ প্রঙ্গনে উভয় পক্ষসহ স্থানীয় বাবুল মিয়া, সমসু মিয়া, আব্দুর রহমান, ময়না মিয়া, আশিক মিয়া, আহমদ আলী, গয়াছ মিয়া রাজু আহমদ ফয়ছল আহমদসহ স্থানীয় প্রবিণ ব্যক্তি ও সমাজসেবীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় গ্রামের অনেকেই জানান, গিরিজা প্রশন্ন চৌধুরী শতবছরের উর্ধে প্রাচিন এই মসজদি ও মাজারের জায়গাটি দান করেছেন বলে জানতে পেরেছি। কিন্তু একটি মসজিদে যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি অত্যান্ত লজ্জাজনক।মসজিদের মুতাওয়াল্লি মনতছির আলী বলেন, দীর্ঘ দিন পর আজকে গ্রামের অনেকেই এই মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন। সকলের আন্তরিকতায় মসজিদের রাস্তা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়েছে। উদ্যোগ গ্রহন করায় স্থানীয় গ্রামবাসী ও তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যাবাদ জানাচ্ছি।আলী আহমদ বলেন, মসজিদে যাতায়াতে কোন সময় কাউকে বাধা প্রদান করিনি। আমরাও চাই মসজিদে যাতায়েতে সুন্দর একটি রাস্তা হোক।তদন্ত কমিটির সদস্য তাজপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবির আহমদ বলেন, মসজিদে যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যসহ গ্রামবাসী উভয় পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সামাধন হয়েছে। প্রতিবন্ধকতার সরিয়ে উভয় পক্ষ মসজিদে যাতায়েতে স্থায়ী রাস্তা নির্মাণে আন্তরিক। স্থানীয়দের সহায়তায় মসজিদে যাতায়াতে পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে স্থায়ীরাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে।