৪ শতক জায়গা ভরাট করতে ৫ বিঘার আমবাগানকে পুকুর করতে ইউএনওর অনুমতি। দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২৫ শহিদুল ইসলাম।। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে একটি আমাবাগানকে উজার করে পুকুর খননেন অনুমতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও নিশাত আনজুম অন্যন্যার বিরুদ্ধে। লিখিত কোন অনুমোদন না থাকলেও ইউএনও ফসলী জমিতে পুকুর খনন করতে মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন বলে জানান পুকুর খননকারী মো. চুটু ও তার ছেলে মো. ডালিম। জানা যায়, প্রায় মাসখানেক ধরে গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের নুনছামাটি এলাকায় প্রায় ৫ বিঘা আমবাগানে পুকুর খনন চলছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের বাধায় বন্ধ হয় অবৈধভাবে পুকুর খননের কাজ। এরপর হঠাৎ করেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অন্যন্যা পুকুর খননকারী মো. চুটুকে ডেকে খননের জন্য বলেন বলে জানা যায়। তবে পুকুর খনন করে ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় নিহত চাঁপাইনবাবগঞ্জের তারেক হোসেনের পরিবারের জন্য দেয়া ৪ শতক জায়গা ভরাট করতে প্রয়োজনীয় মাটি দেয়ার শর্ত দেন ইউএনও। তবে কিছু মাটি দিয়ে ভরাট করলেও বাইরে মাটি বিক্রির কথা জানান নিহত শহীদ তারেক হোসেনের বাবা, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুকুর খননের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা। স্থানীয় বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, মাঝারি সাইজের আমবাগান ছিল জমিটিতে। কিছুদিন আগে থেকে হঠাৎ করে আমগাছ কেটে সেখানে পুকুর খননের কাজ শুরু হয়৷ এরপর কি কারনে আবার হঠাৎ পুকুর খনন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত দুই দিন ধরে আবারো পুকুর খনন শুরু হয়েছে। তবে এবার শুনেছি, ইউএনও নাকি পুকুর খননের অনুমতি দিয়েছেন তাদেরকে। স্থানীয় কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, জীবন্ত আমগাছ সাবাড় করে অবৈধভাবে পুকুর খনন করছিল চুটু। পরবর্তীতে বন্ধ করে দেয়া হয়। গত দুই দিন থেকে চুটু ও তার ছেলে ডালিম প্রচার করছে, ইউএনও নাকি তাদেরকে পুকুর খনন করতে বলেছে। এসব বলে দেদারসে মাটি খনন ও বিক্রি করছে তারা। শহীদ পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া জায়গায় দু-এক গাড়ি দিয়ে বাকি মাটি আশেপাশের ইটভাটা ও বিভিন্ন জায়গায় ভরাট হিসেবে মাটি বিক্রি করছে। আরিফুল ইসলাম নামের এক যুবক বলেন, শহীদ পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া জায়গায় হয়ত সর্বোচ্চ ২০ গাড়ি মাটি লাগবে। কিন্তু এই সুযোগে ইউএনওর অনুমতি পেয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টর মাটি কেটে পুকুর খনন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব মাটি নিয়ে গিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করছে তারা। এমনকি প্রায় ২০ ফিট গর্ত করে পুকুর খনন করে হাজার হাজার ট্রাক্টর মাটি কেটে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ তারেক হোসেনের বাবা আসাদুল ইসলাম বলেন, আমরা ভূমিহীন হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বেলাল বাজার এলাকায় ৪ শতক জমি দিয়েছে। কিন্তু জায়গাটি কিছুটা গর্ত হওয়ায় সেখানে ভরাট দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমাদেরকে মাটি দিলে যেহেতু তারা (পুকুর খননকারী) কোন টাকা-পয়সা পাচ্ছে না, তাই বাইরেও মাটি বিক্রি করছে। অবৈধ পুকুর খননকারী মো. চুটু বলেন, আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে ইউএনও নিজে আমাদেরকে ডেকে পুকুর খনন করে শহীদ পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া জায়গায় ভরাট দিতে বলেছেন। এরপরই বন্ধ হওয়া পুকুরের বাকি খননের কাজ করছি। প্রয়োজনে ইউএনও বা ডিসিকে ফোন দিয়ে জানতে পারেন। এবিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত আনজুম অন্যন্যা বলেন, কে কি বক্তব্য দিয়েছি, তা আমাদের দেখার বিষয় না। তবে একটি জায়গায় ডিসি স্যারের অনুমতি নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া জায়গা বসবাসের জন্য ভরাটের কাজে ব্যবহার করতে মাটি দেয়া হচ্ছে, এর অনুমতি দেয়া আছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে পুকুর খননের মাটি অন্য কোন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে কি না তা তদারকি করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যদি বাইরে মাটি বিক্রির কোন তথ্য পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: