ফুলকপি এখন গরু ছাগলের খাদ্য দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৪, ২০২৫ মাহাবুল ইসলাম।। মেহেরপুরে ফুলকপি এখন গরু ছাগলের খাদ্য প্রতিবারের ন্যায় এবারও মেহেরপুর জেলায় প্রচুর পরিমাণ জমিতে পাতাকপি ও ফুলকপির উৎপাদন হয়েছে। আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় কপির ফলন আশানুরূপ হলেও বাজার মূল্যে হতাশ চাষিরা। জেলায় এখন ফ্রীতে ফুলকপি নেওয়ার লোকজনও নেই। তবে গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে নিতে কোন কোন এলাকায় চলছে ধুম। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি), সরেজমিনে জেলার আজান,সাহারবাটী, ভাটপাড়া, মাইলমারী, টেংরামারী, হিন্দা, গাড়াডোব, কাথুলী ও শ্যামপুরসহ কয়েকটি এলাকায় কৃষকদের সাথে কথা বলে তিনারা জানান, বাজারে ফুলকপি কেনার কোন লোক না থাকায় কৃষকের ক্ষেতেই ফুলকপি ফুটে নষ্ট হচ্ছে। মেহেরপুরের খুচরা বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকায়। পাইকারি বাজারে ফুলকপির চাহিদা না থাকায় কৃষকরা পড়েছে বিপদে। ফুলকপির ক্ষেতেই এসব কপি ফুটে, ফেটে এবং পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বিঘা জমির ফুলকপি ১ হাজার টাকায় কেনার লোকও নেই। চাহিদা না থাকায় কেউ কেউ ক্ষেতেই আর আবাদ করবেনা বলে কর্তন করে ফেলে দিচ্ছেন। অন্যান্য বছরগুলোতে গরুর খাদ্য হিসেবে খামারিসহ সাধারণ মানুষ এসব সবজি ৪/৫ টাকা পিস কিনে থাকলেও এবার কেনার লোক নেই। ফ্রী দিতেও এসব কপি নেওয়ার লোক না থাকায় অনেকের কপি ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। নতুন ফসলের আবাদ করতে জমি চাষের উপযোগী করতে গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে দিতে চাইলেও অনেক এলাকায় নেওয়ার কেউ নেই। তবে কিছু এলাকায় চলছে ফ্রীতে ফুলকপি নেওয়ার ধুম। আজান,সাহারবাটী ও মাইলমারী গ্রামের সুজন, আছানুল, মিয়া ,রবিউল,আশিক ও সিপাহি জানান, ১ বিঘা জমিতে ফুলকপি আবাদ করতে ৩০/৩৫ হাজার টাকা এমনকি ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয় কিন্তু খরচ উঠানো তো দূরের কথা জমি পরিষ্কার করতেই এখন গুনতে হবে বাড়তি টাকা। হেমন্তের শেষের দিকে এসব কপি প্রতি বিঘা ৭০/৮০ হাজার টাকায় ব্যবসায়ীরা কিনলেও এখন ৫ হাজার টাকাতেও কেনার লোক নেই। তবে পাতা কপি কেনা অব্যাহত রয়েছে ৭০/৮০ হাজার টাকা বিঘা। যদিও ফুলকপি ও পাতাকপি একই মূল্যে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন। আজান গ্রামের খাইরুল ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে ১০/১২ হাজার টাকায় ফুলকপি কিনলেও এখন তাদের হদিস মিলছেনা। টাকা না দিয়েই উধাও তারা। এমতবস্থায় কৃষকরাও এসব কপি নিয়ে উপায় না পেয়ে ফ্রীতে দিতে চাইলেও লোক পাচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে কথা বলেছেন এমন ব্যবসায়ীও পাওয়া গেছে। যিনি পাতা ও ফুলকপির বাজার ও সমস্যা সম্বন্ধে বলেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলার সবজি একত্রে উঠা এবং বাজারে প্রচুর পরিমাণে আমদানি হওয়ায় চাহিদা কমেছে। একারণে তিনারাও কপি কেনা আপাততঃ বন্ধ রেখেছেন। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রচুর পরিমাণ জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। গত কয়েকদিন পূর্বেও ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমান বাজার মূল্য কমেছে। কৃষকরা একই ফসল অধিক পরিমাণ জমিতে আবাদ করায় এমনটি হচ্ছে। এক্ষেত্রে কৃষকরা অল্প অল্প করে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করলে ক্ষতির সম্মুখীন হতো না। তিনি জানান, কৃষকদের লোকসান পুষিয়ে নিতে তেমন কিছুই করণীয় নেই। তবে আগামীতে কোন প্রণোদনা সহায়তা আসলে সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে দেওয়া হবে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: