অর্থাভাবে তার মেডিকেলে ভর্তি অনিশ্চিত দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৪:২১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪ সব্যসাচী বিশ্বাস,অভয়নগর। যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার খানপুর ঋষি পল্লীর অসিত দাসের ছেলে অপু দাস।সে চলতি বছরে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। পিতা অসিত দাস মনিরামপুর বাজারে জুতা সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সে স্থানীয় খানপুর ঋষি পল্লীর ব্র্যাক সেন্টার থেকে ৫ম শ্রেনি পাশ করে মণিরামপুর সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। সেখান থেকে ২০২০ সালে এসএসসি ও মণিরামপুর সরকারী কলেজ থেকে ২০২২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ন হন। এরপর বিগত ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি সফল হতে পারেননি। তবও হার না মানা অপু দাস হাল ছাড়েনি। চলতি ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে কোন প্রকার কোচিং না করেই রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফলশ্রুতিতে অপু দাস এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৫ নম্বর পেয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। অপু দাস বলেন, আমার জীবনের বড় আশা ছিল আমি একজন চিকিৎসক হব, গরীব-দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমি চেষ্টা করেছি। হয়তো ভর্তির সুযোগ পেয়েছি কিন্তু সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। জানি না আমি কিভাবে মেডিকেলের খরচের মোকাবেলা করবো। আমার অসহায় পিতা-মাতা কিভাবে কি করবেন সেটি আমাকে ভাবিয়ে তুলছে। পিতা-মাতা ভাই শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধবসহ সকলের কাছেআমি ঋনী। আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার পিতা-মাতা খুব কষ্ট করে থাকেন। আমি তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। মা সাধনা রানী বলেন, আমি অন্য দশ জনের মত আমার ছেলেকে ভালো কাপড় চোপড়,বই-খাতা কিনে দিতে পারিনি। আমাদের কোন জমি-জমা নেই। ওর বাবা রাস্তার ফুটপাতে বসে জুতা সেলাই ও জুতা কালির কাজ করেন। আমার অপু আজ ডাক্তার হবে এই কথা শুনে ভালো লাগছে কিন্তু ওকে যে কিভাবে আমরা পড়াবো তাই নিয়ে মহাচিন্তায় পড়েছি। অপুর পিতা অসিত দাস বলেন, আমি লেখা-পড়া জানিনে, জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বড় হয়েছি। ক্ষেত খুলা নেই, জুতার কাজ করে সংসার চালাই। ওরা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করছে । বাবা হয়ে বলতে লজ্জা পাচ্ছি। শুনতেছি অপুকে পড়াতি পারলি সরকারী হাসপাতালের অনেক বড় ডাক্তার হবে। কিন্তু আমি কিভাবে পড়াবানে। আমারতো কিছুই নেই। প্রতিবেশি মিলন দাস বলেন, অপু পড়ালেখায় খুব ভালো। পড়া লেখা ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না সে। অপু ডাক্তারিতে চান্স পেয়েছে জেনে আমরা এলাকাবাসী খুব খুশী । আমদের পাড়ায় একজন বড় ডাক্তার হবে। প্রতিবেশী গঙ্গা রাণী দাস বলেন, অপু খুব শান্ত স্বভাবের। ওদের পড়া লেখার জন্যিই ওর মা-বাবা খুব কষ্ট করে । ওর মা টায়ার টিউব-কাটার কাজ করে। ওর বাবা বাজারে জুতা সেলাই-কালির কাজ করে । ওরা খুব অভাবী। অপুর শিক্ষক অধ্যাপক বাবুল আকতার বলেন, কঠোর অধ্যবসায় ও ইচ্ছা শক্তি দিয়ে যে সব কিছু অর্জন করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো অপু দাস। দ্বারিদ্রতা হার মেনেছে তার ইচ্ছা শক্তির কাছে। আমি তার সর্বাঙ্গীন সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করি। তার সামনে খরচের অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। SHARES সারা বাংলা বিষয়: