কোটচাঁদপুরে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে ভ্যান চালকের ছেলে সামাউল ইসলাম

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২৫

মুহাঃ বাবুল হুসাইন। ।   রবিবার বিকেলটা ছিল সামাউলের পরিবারে আনন্দের দিন। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর জানা যায়, ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন অদম্য মেধাবী সামাউল ইসলাম। হতদরিদ্র ঘরের ছেলে সামাউল চিকিৎসক হবেন, এই খুশিতে আনন্দ-আবেগে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করে দেন পরিবারের সদস্যরা। সামাউল ইসলামের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বাজেবামনদাহ গ্রামে। প্রথম আলো ট্রাস্টের সহযোগিতায় পড়ালেখা করা এই অদম্য মেধাবী ছোটবেলায় বাবার সবজি বিক্রিতে সহযোগিতা করেছেন। পরিবারে আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী; কিন্তু পড়াশোনার পথ থেকে কখনো বিচ্যুত হননি তিনি। কঠোর পরিশ্রম করে তিনি সফলতার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে সবজি বিক্রি করেছি। এসএসসিতে ভালো ফল করার পরও কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। প্রথম আলো ট্রাস্ট থেকে বৃত্তি পাওয়ায় উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনায় তেমন অসুবিধা হয়নি। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। প্রথম আলো ট্রাস্ট পাশে থাকলে তার তেমন কোনো চিন্তা করতে হবে না। সামাউল ইসলাম পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পান জিপিএ-৫। এরপর ২০২৪ সালে কোটচাঁদপুর সরকারি খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজ থেকে এইসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেন। সুযোগ এসেছে চিকিৎসক হওয়ার। অদম্য মেধাবী সামাউল ইসলাম বলেন, তিনি চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চান। সমাজের অবহেলিত গরিব মানুষগুলো যেন চিকিৎসাসেবা পায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাবেন। তিনি অনেক বড় চিকিৎসক হতে চান। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মেধাতালিকায় সামাউলের অবস্থান ২৪৬। তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এমনকি মাইগ্রেশানে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতে পারেন বলে আশা করছেন। সামাউলের বাবা তাজির উদ্দিন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এক চোখে তিনি দেখেন না। এ অবস্থায় গ্রামে গ্রামে ঘুরে সবজি বিক্রি করতেন। বর্তমানে ভ্যানে করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভাঙারি মালামাল কিনে বাজারে বিক্রি করেন। এতে প্রতিদিন ২০০ টাকা আয় করেন, যা দিয়ে সংসার চলে। সামাউল জানান, বাবা–মা সালমা খাতুন ও ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া ভাই সিয়াম উদ্দিনকে নিয়ে তাঁদের পরিবার। বাবা সংসার চালাতে গিয়ে তাঁর কোনো পড়ার খরচ দিতে পারেন না। তারপরও ইচ্ছা সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বড় চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার।