হাতিয়ায় দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:২৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫
মামুন রাফী।।  নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার খাসেরহাট মাজেদিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী আজহারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, আজহার উদ্দিন মাদ্রাসায় উপস্থিত না হয়ে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে মাদ্রাসা প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে বাহিরে ঘুরে বেড়ান। এমনকি, তিনি মাদ্রাসার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পরিত্যাগ করে অন্য স্থানে সময় কাটাচ্ছেন, যার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সহায়তা বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানা যায়। আজহার উদ্দিন মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা (অফিস সহকারী), বাহিরে পরিচয় দেন শিক্ষক হিসেবে এবং হাতিয়া উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি পরিচয় দিয়ে হাতিয়ায় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনিয়ম করে বেড়াচ্ছে নিজের পার্সোনাল কাজে ভি পি নুরুল হক নুরের নাম ও গণ অধিকার পরিষদের নাম বিক্রয় করে প্রশাসনিক ও আইনশৃংখলা লোকজনকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। সরকারি জায়গা দখল করে বিক্রয় করেন বলেও অভিযোগ  রয়েছে হাতিয়া তমরদ্দি রোডের খাসের হাট বাজারের পশ্চিম মাথায় রাস্তার উত্তর পাশে ৪ ডিং  জায়গা বিক্রয় করেন মাকছুদ নামের ব্যক্তির কাছে, সেই জায়গায় মাকছুূদ ঘর তৈরী করতে গেলে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চরশ্বঈর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তছিলদার আব্দুল হান্নান কাজ বন্ধ করে দেন। অভিযোগ রয়েছে যে, আজহার মাদ্রাসায় না গিয়ে প্রায়ই বাইরে ঘুরে বেড়ান এবং প্রধান শিক্ষক আবু জাফরকে ম্যানেজ করে তাঁর অনুপস্থিতি গোপন রাখার চেষ্টা করেন। এতে মাদ্রাসার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষকদের ও ছাত্রদের নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মাদ্রাসার অভিভাবকরা এ বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে নি।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রী বলেন, আজহার ভাই মাদ্রাসার অফিস সহকারী, উনার কাছে আমরা কোন কাজে গেলে, উনি এমন ব্যবহার করে যেন সেই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল। আবার উনি মাসে ৪-৫ দিন মাদ্রাসায় আসে, আর বাকী সময় উনার বই দোকানে থাকেন, বাজারে বসে থাকেন, মাদ্রাসায় আসলেও খুবই কম সময় থাকেন। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী মাকসুদ জানান, আজহার উদ্দিন ৪ লক্ষ টাকা নিয়ে আমার থেকে জমি বিক্রি করে, আমি জানতাম না এটা সরকারি জমি, এখন ঘর তুলতে গিয়েছি তছিলদার হান্নান ঘর তুলতে দিচ্ছে না সরকারি খাস জমি বলে। আমি এটার সমাধান চাই। এই বিষয়ে জানতে চাইলে আজহার উদ্দিন জানান, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করতেছে, আমি নিয়মিত মাদ্রাসা উপস্থিত থাকি, যদি অনিয়ম করতাম তাহলে প্রধান শিক্ষক সহ যারা রয়েছেন তারা তো অবশ্যই বিষয়টা নজরে নিবেন। কোন ছাত্রীরা অভিযোগ করেছে তাদেরকে আমার কাছে আসতে বলেন।  সরকারি জমি বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন জমি অনেক আগেই বিক্রি করেছি, কেনার সময় তো দেখে কিনেছে এখন সরকারি জমি কিভাবে হয়। তিনি নিজেকে সাপ্তাহিক হাতিয়ার কথা পত্রিকার সাংবাদিক বলে দাবী করেন এবং তিনি সাংবাদিকতা কিভাবে করতে হয় সেটাও তিনি জানেন।  এই বিষয়ে সাপ্তাহিক হাতিয়া কথা পত্রিকার সম্পাদক মোঃ কেফায়েত উল্ল্যাহ জানান, আজহার উদ্দিন হাতিয়ার কথার কোন প্রতিনিধি নন। তিনি প্রতিনিধি না হয়ে নিজেকে সাংবাদিক দাবী করতে পারেন না অবশ্যই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।  এই বিষয়ে তসিলদার আব্দুল হান্নান জানান, আমি কাজ বন্ধ করিনি এটা হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইবনে জায়েদ আল হাসান বন্ধ করেছেন আমিও সাথে ছিলাম। যেই জমি নিয়ে সমস্যা সেটা খালের জমি সরকারি খাস জমি যদি এখানে ঘর দেওয়া হয় তাহলে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়বে।  এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা গণ অধিকার পরিষদের সাবেক আহাবায়ক তাইজুল ইসলাম জানান, হাতিয়া উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের কোন কমিটি নেই। প্রধান শিক্ষক মাওলানা আবু জাফর জানান, আজহার উদ্দিন অফিস সহকারী, অফিসের যত কাজ থাকে তাকেই করতে হয়, কাজের সুবাদে ওছখালীতে যেতে হয় তখন হয়তো তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে বসে। দলীয় প্রভাব বিস্তার করে কি হবে অফিসের যত কাজ তাকেই তো করতে হবে।  কোন ছাত্রী যদি অভিযোগ করে আমার কাছে আসেনি কেন, আমার কাছে অভিযোগ দেওয়া উচিত ছিলো। আজহার উদ্দিন অফিসের বাহিরে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে কিনা সেটা আমার জানার দরকার নেই। তবে সে হাতিয়া উপজেলার গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলে পরিচয় দেয়।