মামলা নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার বাণিজ্যর অভিযোগ ১৭ দিনেও উদ্ধার হয়নি গণধর্ষণের শিকার তরুণীর লুণ্ঠিত মালামাল- তদন্ত কর্মকর্তার গড়িমসি দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১:৪০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫ সারোয়ার নেওয়াজ শামীম । । বিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটের করিমপুর এলাকার খোয়াই নদীর বাঁধে গণধর্ষণের শিকার তরুণী ও লাঞ্ছিত হওয়া তরুণীর লুণ্ঠিত মালামাল ১৭ দিনেও উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় ৪জনকে আসামী করে চুনারুঘাট থানায় মামলা হয়। এ প্রেক্ষিতে পুলিশ পারভেজকে গ্রেপ্তার করে, অপর আরেক আসামী শিবলু ওরফে শরীফ স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়। ঘটনার মূল হোতা কামাল ও রায়হান পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ অবস্থায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে মামলার প্রধান আসামী কামাল মিয়াকে ধরে ছেড়ে দিয়ে অর্থ আদায় করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের । এঅবস্থায় সুবিচার পাওয়া নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে সংশয় তৈরী হয়েছে। ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দুই তরুণী ঢাকায় একটি বাসায় পরিচারিকার কাজ করেন। সম্পর্কে তারা একে অপরের চাচাতো বোন। একজনের বয়স ১৮, অপরজনের ১৭। যার বয়স ১৭ তাঁর সম্প্রতি বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষে দুই তরুণী ১৫ জানয়ারী ছুটি নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত ১১টার দিকে তারা একটি যাত্রীবাহী বাসে করে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এসে পৌঁছান। পরে তারা নবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত তাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য একটি অটোরিকশা ভাড়া করেন। শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রিজ এলাকা পাড়ি দিয়েই চালক অটোরিকশার গতি কমিয়ে তিনজন তরুণকে অটোরিকশায় তুলে নেন। এ সময় তরুণীরা চালকের কাছে জানতে চান তাদের ভাড়া করা অটোরিকশায় কেন অতিরিক্ত লোকজন ওঠানো হলো। তখন চালক বলেন, ওরা সামনে গিয়ে নেমে যাবে। এ কথা বলে কিছুক্ষণ পরে অটোরিকশার চালক ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে থেকে নেমে অন্য খোয়াই নদীর বাঁধে প্রবেশ করেন। অটোরিকশাটি কোন পথে যাচ্ছে, তা আঁচ করতে পারেননি দুই তরুণী। একপর্যায়ে চালক চুনারুঘাট উপজেলার খোয়াই নদীর বাঁধে একটি স্থানে গিয়ে অটোরিকশাটি থামিয়ে দেন। তরুণীরা কিছু বোঝার আগেই চালক ও সঙ্গে থাকা অপর তিনজন ১৮ বছরের তরুণীকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গণধর্ষণ করে। সঙ্গে থাকা ১৭ বছরের অপর তরুণীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই তরুণী চিৎকার করে দৌড়ে পালাতে থাকলে ধর্ষকারীরা ভয়ে নিজেরাও ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাওয়া ওই তরুণী পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে তার চাচাতো বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে দুই তরুণী ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থিত গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেন। তারা মধ্যরাতে গ্রামবাসীদের তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়টি জানালে দল বেঁধে লোকজন ঘটনাস্থলে এসে কাউকে পাননি। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পরদিন সকালে তারা তাদের বাড়ি পৌঁছান। বাড়িতে গিয়ে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের জানালে মানসম্মানের ভয়ে দুই দিন তারা নীরব থাকেন। পরে ধর্ষিতা তরুণীর চাপে তার মা বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। এ মামলায় অটোরিকশার চালকসহ চারজনকে আসামি করা হয়। মামলার বাদী ও ধর্ষিতা তরুণীর মা বলেন, তার মেয়ের বিয়ের দিন–তারিখ ঠিক হয়েছিল। তার মেয়ে ঢাকায় একটি বাসায় পরিচারিকার কাজ করে ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন এবং স্বর্ণালংকার হাতের দুটি মোবাইল। সেই টাকা স্বর্ণ সঙ্গে করে নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে এ ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনায় তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এখন তাদের বিয়েও ভেঙ্গে গেছে। তিনি বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভালো ব্যবহার করেন না। লুণ্ঠিত মালামাল পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। মামলা পরিচালনায় অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ, তদন্তকারী টাকা না পেয়ে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করছেন না। শুনেছি তিনি আসামি পক্ষের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। এখন দেখছি, আমাদের ইজ্জতের সঙ্গে টাকাও গেছে। এখানে সুবিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে এসবের অস্বীকার করে কাজ চলছে বলে দাবী করে ইন্সপেক্টর তদন্ত বলেন, আসামীর খোঁজে গিয়ে কামালের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রধান আসামীকে পাওয়া জায়নি। SHARES সারা বাংলা বিষয়: