প্রকৃত সাংবাদিক কোন রাজনৈতিক দলের পার্সোনাল ব্যক্তি নয়।

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৫০ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২৫
মোঃ আলমগীর হোসেইন
সাংবাদিকতা পেশার মূল ভিত্তি হলো সত্য ও নিরপেক্ষতা। একজন সাংবাদিকের কাজ হলো তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করা, যাতে এই সমাজ উপকৃত হয়। এজন্য তাকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হয়, বিশেষ করে রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিদের ও সঙ্গে। কারণ তথ্যের যথার্থতা নিশ্চিত করতে এবং দায়িত্বশীল রিপোর্টিং করতে সাংবাদিককে নানা স্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়।
অনেক সময় সাংবাদিকরা রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে একই ফ্রেমে থাকেন, কারণ তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। এতে নেতার পাশে ছবি থাকলেই সাংবাদিককে ‘কোন নেতার লোক’ হিসেবে চিহ্নিত করা একধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা।
দুর্ভাগ্য জনভাবে, আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সাংবাদিকের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তার পেশাগত কাজকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এটি শুধুমাত্র সাংবাদিকের ব্যক্তিগত ও পেশাগত সুনাম ক্ষুণ্ন করে না, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপরও হুমকি সৃষ্টি করে। ৩নং-বোররচর ইউনিয়নের অবৈধ ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি’র অভিযোগ এই বিষয়ের সংবাদ প্রকাশ করায় বোররচর ইউনিয়ন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ বলেন একজন সাংবাদিককে   এটা তো  আওয়ামী লীগের সাংবাদিক।
মনে রাখতে হবে সাংবাদিকতা কোনো পক্ষের হয়ে কাজ করার জায়গা নয়, এটি জনগণের স্বার্থ রক্ষার মাধ্যম। তাই সাংবাদিকদের কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে, বরং তাদের নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতাকে সম্মান জানানো উচিত। অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে গণমাধ্যমের সঠিক ভূমিকা ব্যাহত করার চেয়ে বরং প্রকৃত সাংবাদিকতার বিকাশে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
সাংবাদিকেরা সহিংসতা ও বিধিবহির্ভূত আটকের শিকার হয়ে চলেছেন, তাঁদেরকে গোপন নজরদারির লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে এবং এই প্রবণতা বিশেষভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে সংঘাত ও নির্বাচনের সময়গুলোতে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের হুমকি বা হামলার জন্য কাউকে জবাবদিহি করতে হয় না এবং সাংবাদিকদের ওপর সহিংস হামলার জন্য রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী বা কোনো অরাষ্ট্রীয় শক্তিকে বিচারের মুখোমুখিও হতে হয় না। সাংবাদিকেরা এখন যেসব ভিত্তিহীন মামলার শিকার হচ্ছেন, তা আগে কখনো দেখা যায়নি। স্ল্যাপ (স্ট্র্যাটেজিক ল-স্যুটস অ্যাগেইনস্ট পাবলিক পার্টিসিপেশন) নামে পরিচিত এই মামলাগুলো সাজানো হয় সাংবাদিক বা সেই সব ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য, যাঁরা ক্ষমতাবান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেন। প্রায় ক্ষেত্রে, এসব মামলার অভিযোগগুলো হয় ভিত্তিহীন, অসার বা অতিরঞ্জিত; এগুলো দায়ের করা হয় কোনো সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মীকে চাপে ফেলার জন্য এবং এঁদের সঙ্গে কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয় থাকে না।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য সমস্যার আরেকটি বড় উৎস হলো অনলাইনে তথ্য নিয়ন্ত্রণের রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টা। অনেক দেশেই গণমাধ্যমগুলোকে কাজ করতে হয় কঠোর ও দমনমূলক পরিবেশে। তাই এসব জায়গায় ইন্টারনেট হয়ে ওঠে মুক্ত ও স্বাধীন মতপ্রকাশের শেষ জায়গা। কিন্তু এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ওপরও দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে নানান কৌশলে।
বেশ কিছু দেশে শক্ত হাতে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করা হয়—কখনো ওয়েবসাইট সাময়িকভাবে ব্লক করে দিয়ে, কখনোবা ক্রমাগত ফিল্টারিংয়ের মাধ্যমে।
স্বাধীন সাংবাদিকতার চর্চা এখন বিশাল এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। কোথাও  কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা এমন আইন প্রণয়ন করছেন, যা কথা বলার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে; কোথাও এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে যে, সাংবাদিকেরা তাঁদের কাজ চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন না। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হলে সাংবাদিকদের জানা দরকার, আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে তাঁদের জন্য কী ধরনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে সেই সব বিষয়গুলি চোখে-মুখে আঙ্গুল দিয়ে না জানান দিলে মহান পেশার ব্যপারে প্রশ্ন উঠতে পাড়ে।
বর্তমানে ছবি বাণিজ্য বড় ব্যবসা কত শত পরিবার’কে  ধ্বংস করে পেলছে। মানহানি করা হচ্ছে।
বর্তমান সকরারকে এই বিষয়গুলি নিয়ে আরোও যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে হবে।