বাউফলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে আপন ভাই- বোনের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ১০ জন

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২:৪৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২৫
মোঃ রুবেল হোসেন।।
বাউফলে পুকুরের মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে আপন ভাই ও বোন পরিবারের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, সংঘর্ষে তাদের মা বিবিসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন৷
গতকাল বুধবার (০৫মার্চ) রাত ৮ থেকে ১১টা পর্যন্ত তিন দফায় মদনপুরা ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এই সংঘর্ষ হয়।
এতে আহত হয়েছেন চন্দ্রপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম গাজী, তার মা বিবিজান , স্ত্রী তাসলিমা বেগম, ছেলে সুমন গাজী, বোন ফাতেমা বেগম, বোনের জামাই সালাম মীর, ভাগ্নে নাঈম মীর, স্ত্রীর বোন কহিনুর, স্থানীয় অটোরিকশা চালক জসিম ও ভাগ্নে ভাগ্নীসহ অন্তত ১০ জন।
স্থানীয়রা জানায়, পৈত্রিক জমি সংক্রান্ত বিষয়ে চন্দ্রপাড়া গ্রামের শহিদুল গাজীর সাথে তার বোন ফাতেমার সাথে বিরোধ চলে আসছিল । বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে ঘর নির্মাণ করে বাবা-মা’সহ স্বামী সন্তান নিয়ে থাকেন ফাতেমা। তাদের বাবা মায়েরও অভিযোগ ছেলে শহিদুল ও পুত্রবধূ তাসলিমার বিরুদ্ধে, আর স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাড়িতে থাকতেন শহিদুল।
ওয়ারিসদের কাউকে না জানিয়ে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে একটি পুকুরের মাছ বিক্রি করেন শহিদুল, গতকাল পুকুরের পানি সেচ করে মাছ শিকার করে ওই ব্যবসায়ী। এনিয়ে বোনের ছেলে নাঈম ক্ষুদ্ধ হয়, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মামা শহিদুলকে মারধর করার হুমকি দেয়। ঘটনা শুনে শহিদুলকে নিয়ে স্ত্রী তাসলিমা ও তার বোন কালাইয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা কোহিনুর, ও তাঁর দুই ছেলেসহ প্রায় ১০জন ব্যক্তি ফাতেমার বাড়িতে যায়। তখন বোন ফাতেমা ও তার বাবা-মায়ের সাথে শহিদুল গংয়ের বাকবিতণ্ডা হয়,  একপর্যায় তারা সবাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে, এসময় আহত হয় অন্তত ৭ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উভয় পক্ষ চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসলে, তাদের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এসময় একজন নারী (তাসলিমা) ইট দিয়ে সালাম মীরের (ননদের জামাই) মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর তার মাথায় জখম হয়েছে এছাড়াও কয়েকজনকে আঘাত প্রাপ্ত হতে দেখা যায়।’আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, ছয় জনকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. তাসনিম তাসলিমা ইসলাম।’
ফাতেমা বেগমের অভিযোগ, তাদের না জানিয়ে মাছ শিকারের কথা জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয় তার ভাই শহিদুল। পরে কালাইয়া ইউনিয়ন থেকে আসা বহিরাগতদের নিয়ে তার বাড়িতে হামলা করে শহিদুল এবং তাসলিমা। পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয় তাকেসহ তার মা, ছেলে ও বউকে। হাসপাতালে দেখতে গেলে, তখন হামলা হয় তার স্বামী সালামের ওপর। ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায় সালামের। তাদের বহনকারী গাড়ির চালক জসিমকে রক্তাক্ত করার অভিযোগ ভাই শহিদুলের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। শহিদুলের স্ত্রী তাসলিমা’র অভিযোগ, তাদের ভাগের পুকুরের মাছ তারা ধরেছে। অসুস্থ স্বামী শহিদুলকে দেখতে আসেন তার বোন কোহিনুর ও ছেলেরা। হুমকির দেয়ার কথা শোনেন তারা। শহিদুলকে মারধর না করার জন্য অনুরোধ করতে ফাতেমাদের বাড়িতে গেলে ডাকাত বলে ডাক- চিৎকার দিয়ে তাদের ওপর হামলা করে ফাতেমাসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ইন্সপেক্টর (পুলিশ পরিদর্শক, তদন্ত) আতিকুল ইসলাম জানান, ঘটনা জানার পরে চন্দ্রপাড়া গ্রামে ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দাখিল হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।