হারিয়ে যেতে বসেছে সৌন্দর্যের প্রতিক বর্ষার কদম ফুল দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৫ রামকৃষ্ণ তালুকদার ।। আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে,কদমের সুরভে মোহিত আপন মণ।ডুবে আছি তার সু্ঘ্রাণে। অথবা বর্ষার বৃষ্টিস্নাত এই রাতে,একগুচ্ছ কদম হাতে দাড়িয়ে আমি তোমারই অপেক্ষায়। কখন যে আসবে তুমি ?বর্ষাকালে দৃষ্টিনন্দন কদম ফুলকে নিয়ে স্বনামধন্য বিশ্বনন্দিত কবি সাহিত্যিকরা মনের আবেগ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ করেন। এমন সব উক্তির বিষয়টি,সে তো সবারই জানা। আর আমাদের সোনার বাংলাদেশ যে প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি,সে কথা তো বলাই বাহুল্য ! যারই ফলশ্রুতিতে ষড় ঋতুর বর্ষা এক অনন্য ঋতু। আর বর্ষার আগমনকে স্বাগত জানাতে কদম ফুল যেন সর্বদা প্রস্তুত। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গোলাকার সাদা হলুদ রঙে মিশ্রিত ফুলটি দেখতে যেন ভোরের উষা। রূপসী তরুর অন্যতম রূপবতী হলো কদম ফুল। কদম ফুলের সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হন না এমন বেরসিক মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন । বর্ষায় প্রেমিকার মনোরঞ্জনে কদমের জুড়ি নেই। একই সাথে বর্ষার প্রকৃতি বাংলা সাহিত্যে এনে দিয়েছে স্নিগ্ধতা। বর্ষার উপহার সোনা রঙের কদম ফুল নিয়ে রচিত হয়েছে নানা গল্প, উপন্যাস, কবিতা আর গান। মানব কল্যাণে প্রকৃতির সৃষ্টি অসংখ্য ছোট-বড় মাঝারি বৃক্ষরাজির অংশ বিশেষ ফুলের মধ্যে কদম অন্যতম। বর্ষা কালের বাহারি ফুলের রানী কদম ফুল সে তো সবারই চেনা জানা। গাছে গাছে সবুজ পাতার ডালে গোলাকার মাংসল পুষ্পাধার। আর তার থেকে বের হওয়া সরু হলুদ পাপড়ির মুখে সাদা অংশ কদমকে সাজিয়ে তুলেছে ভিন্ন ভাবে। গোলাকার হলদে-সাদা মিশ্রিত ফুলটি দেখতে যেন ভোরের উষা। বর্ষার মেঘের সঙ্গে মিতালি বলেই এর আরেক নাম মেঘপ্রিয়। আর নারীর সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনা করে অনেকেই বলে ললনাপ্রিয়। এ ছাড়াও স্থান কাল পাত্র ভেদে বিভিন্ন নামেও কদমের পরিচিতি রয়েছে। ভিন্নতার ছোঁয়াতে কদম হয়ে উঠেছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য। আষাঢ়ে বাদলের দিনে আগমন ঘটেছে হৃদ্মোহিনী কদম ফুলের। তাই তো বৃষ্টির অবিরাম বর্ষণের সঙ্গে সহসাই ভেসে আসে কদম ফুলের রেণুর মিষ্টি সুবাস। কদম আর বর্ষা একে অপরকে আলিঙ্গন করে রয়েছে বহুকাল ধরে। কদম ছাড়া বর্ষা যেন একেবারেই বেমানান। এ জন্য কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষার দূত। কদম ফুল দেখতে বলের মতো গোলাকার। কদমের একটি পূর্ণ মঞ্জরীকে সাধারণত একটি ফুল মনে করা হলেও এটি অজস্র ফুলের সমাহার। এর একটি মঞ্জরীতে প্রায় আট হাজার ফুল বিন্যস্ত থাকে। কদম ফুল দেখতে বলের মতো গোল, মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস। শিল্প-সাহিত্যের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে কদম ফুলের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। কদম ফুল বর্ষার দূত। জৈষ্ঠ্যের শেষে আষাঢের শুরুতে কদম ফুল ফোটে। হাওর অঞ্চলের রাজধানী খ্যাত আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সহ বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে কদম ফুল গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে। কদম ফুলের মৌ মৌ গন্ধে আর দৃষ্টিনন্দন রুপ সবার নজর কাড়ছে। বর্ষার অনুভূতি ও অপরূপ সৌন্দর্যের দাবিদার কদম ফুল। তবে কদম গাছ কমে যাওয়ায় এখন মানুষ তার ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে। এমনকি কালের বিবর্তনে কদম ফুল গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এইতো মাত্র কয়েক বছর আগেও আষাঢের কদম গাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকত। কদম ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য ফুল পিপাসুদের তৃপ্তি মিটাতো। তরুণ-তরুণীরা কদম ফুল তাদের প্রিয়জনকে উপহার দিত। মেয়েরা পরতো খোঁপায়।খেলায় মেতে উঠত শিশুরা। সর্বোপরি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতি ঐতিহ্য রক্ষায় প্রত্যেক বাড়ির আঙিনায় একটি করে কদম গাছ লাগানো জরুরী বলে স্থানীয় পরিবেশবিদদের অভিমত । SHARES সারা বাংলা বিষয়: