কেন্দুয়ায় জমি সংক্রান্ত জেরে গৃহে হামলা: গর্ভবতীসহ তিন নারী গুরুতর আহত, এক বৃদ্ধার মৃত্যু

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২৫
কোহিনূর আলম।।  নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের সাহিতপুর গ্রামে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে এক গৃহস্থ ও ব্যবসায়ীর বাড়িতে সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিজ্ঞ আদালতে । এতে গৃহকর্তার স্ত্রী, গর্ভবতী পুত্রবধূ এবং বৃদ্ধা মা গুরুতর আহত হন । পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধার মৃত্যু ঘটে। গত ৩জুলাই মো. সঞ্জু মিয়া (৫৬) বাদী হয়ে ৫ জনের নামোল্লেখ করতঃ অজ্ঞাত ১০/১৫ বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আমলী আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৪৮/৪২৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৩৭৯/৫০৬/৩৪ ধারায় একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন । যার সি আর মোঃ নং ১৬৬(১)২০২৫ । অভিযোগ মারফত জানা যায়, মো. সঞ্জু মিয়া তার স্বত্ব দখলীয় জমি নিয়ে প্রতিবেশী সুব্রত বর্মন, শীতল বর্মন, সুমন বর্মনসহ কয়েকজনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধে ছিলেন । এ নিয়ে কেন্দুয়া সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন, যাতে তিনি রায় পান । এ রায়ের পর আসামিপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় তার অনুপস্থিতিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার বাড়িতে হামলা চালায় । অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সময় বাদী সঞ্জু মিয়া আদালতে থাকায় আসামিরা তার বাড়ির উঠানে প্রবেশ করে খুঁটি গাড়িয়ে দখলের চেষ্টা করে । এতে বাধা দিলে তার স্ত্রী নাজমা বেগমকে ধারালো রামদা দিয়ে মাথায় কোপ মেরে গুরুতর জখম করে সুব্রত বর্মন । অপর আসামিরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে তাকে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে । যিনি এখনো চিকিৎসাধীন ।  চিৎকার শুনে তার সাত মাসের গর্ভবতী পুত্রবধূ আয়শা আক্তার এগিয়ে এলে তাকেও বেধড়ক মারধর করা হয় এবং তলপেটে লাথি মারা হয় । এসময় বৃদ্ধা তাহেরা খাতুন (বাদীর মা) এগিয়ে এলে তাকেও লোহার রড ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করা হয় । পরবর্তীতে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিরা ঐ সময় নারীদের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিঁড়ে নিয়ে যায় এবং এক ব্যক্তির পকেট থেকে নগদ ৪১ হাজার টাকা লুট করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে । হামলার সময় ঘরবাড়ি ভাঙচুর চালিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতিও করে তারা । ঘটনার পর আহতদের প্রথমে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় । বাদী সঞ্জু মিয়া ও সাক্ষী হাদিস মিয়ার দাবি, অভিযুক্তরা তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় থানায় মামলা দায়ের করতে না পেরে বর্তমানে আদালতের আশ্রয় নেন তারা । সঞ্জু মিয়া আরো বলেন, আমি শুধু বিএনপিকে সমর্থন করায় ৩টি মিথ্যা রাজনৈতিক মামলার আসামী করা হয় । আমি মূলত একজন ব্যাবসায়ী ।
এ বিষয়ে নেত্রকোণা পিবিআই কর্মকর্তা এসআই নূর উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, মারামারি হয়েছিলো -এ ঘটনার সত্যতা আছে । তিনি আরো বলেন, তদন্ত অব্যাহত রয়েছে । ইতোমধ্যে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি ।