গোবিন্দগঞ্জে গোপনে মাদ্রাসার গভর্নিং বডি গঠনের প্রতিবাদ ও বাতিলের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২৫
ইমন মিয়া।।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শিবপুর ফজরিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার গভার্নিং বডি গঠনে বিধি লঙ্ঘন, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার মহিমাগঞ্জ-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের পাঁচগছি বাজারে শিবপুর ফজরিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন মাদ্রাসার দাতা পরিবারের সদস্য, অভিভাবক বৃন্দ ও এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আফরুজা পারভীন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবক উপজেলা  যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আবদুল মজিদ,শিবপুর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসিন আলী, ময়েন উদ্দিন, দাতা পরিবারের সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম, নূর আলম সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ, মোঃ আলমগীর, আনোয়ার হোসেন, আবু বক্কর, আশরাফুজ্জামান মিলন, মোঃ বাদশা, দুদু মিয়াসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আফরুজা পারভীন জানান, মোঃ নূর আলম সিদ্দিকী শিবপুর ফজরিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয় হতে তাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সভাপতি হিসাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে বিদ্যোৎসাহী এবং প্রতিষ্ঠাতা/দাতা সদস্য হিসাবে একজনকে সদস্য সচিব থাকার আদেশ জারী হয়।
এর প্রেক্ষিতে শিবপুর ফজরিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ ইসমাইল হোসেন গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের পুনতাইর পাছপাড়া এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে মো. নাজিম উদ্দিনকে অত্যন্ত সুকৌশলে এক লক্ষ টাকার ভূয়া চাঁদা আদায়ের রশিদ বহি সত্যায়ন করে তাকে আজীবন দাতা সদস্য দেখিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে এডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করে।
অথচ নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য হতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ৩০ দিন সময় দিয়ে নোটিশ জারী করবেন। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে দুই লক্ষ টাকা মাদ্রাসা ফান্ডে এককালীন দান করবেন। দানকৃত টাকা মাদ্রাসার অনুকূলে জেনারেল ফান্ডে জমা দিয়ে সদস্য হিসাবে তালিকাভুক্ত হবেন। পূর্ণাঙ্গ এডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে দাতা সদস্যের পূর্বে প্রতিষ্ঠাতা সদস্যকে খুজতে হবে। তিনি এসব উপেক্ষা করে গোপনে গভার্নিং বডি তৈরী করেন।
এদিকে, নূর আলম সিদ্দিকীর বিভিন্ন অভিযোগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গত ১৭ মে ২০২৫ তারিখে ঐ ভূয়া দাতা সদস্য নাজিম উদ্দিনকে গভর্নিং বডির সভাপতি এবং বিদ্যোৎসাহী প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের সোনাতলা সাখইল এলাকার বাসিন্দা মোঃ নইম উদ্দিনের ছেলে মো. রেজাউল করিমকে মনোনয়ন দিয়েছেন।
এমতাবস্থায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নূর আলম সিদ্দিকীর দেওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করলে গত ২১ জুলাই ২০২৫ তারিখে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কর্মকান্ডের কারণে সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা ভুয়া তথা মূল্যহীন হয়ে পড়েন। তখন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে নুর আলম সিদ্দিকীর নাম অন্তর্ভুক্ত করার কথা বললে তিনি তাকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত না করে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচনী তফসিল মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচার করেন। যা বিধি বহির্ভূত ও অনিয়মতান্ত্রিক কাজ।
তিনি আরও জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠাতাদের ভোটের মাধ্যমে নতুন পুরাতন সদস্য তালিকাভুক্ত না করে বিধি বহির্ভূতভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ৩ আগষ্ট ২০২৫ তারিখে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং আগামী ১২ আগষ্ট ২০২৫ তারিখে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে পূর্বের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪৫ থেকে ৬০ দিন পূর্বে একসাথে সব ধরনের সদস্যের তালিকা প্রকাশ করে তারপর পূর্ণাঙ্গ গভর্নিং বডির কাজ শেষ করতে হয়।
তাই শিবপুর ফজরিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তালিকাভুক্তির নির্বাচনী তফসিল ঘোষণায় প্রতিবাদ প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি প্রদান ও গভর্নিং বডির কার্যক্রম সাময়িক সময়ের জন্য বাতিলের দাবী জানান তিনি। সেই সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।