লালমনিরহাট হাতীবান্ধায় স্বামী,সতীন ও স্বাশুরীর হাতে গৃহবধূ নির্যাতনের অভিযোগ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩:৫২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০২৫
লুৎফর রহমান ।।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী গোলাপ মিয়া, সতীন, শ্বাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী নারীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের জোড়াপুকুর এলাকায় আজ থেকে ১৬ বছর আগে গোলাপ মিয়ার সাথে বিয়ে হয় পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের মেয়ে জাহানারা বেগমের। বিয়ের পর থেকে অভাবী ও গরীব ঘরের মেয়ে বলে খোটা দিয়ে স্ত্রীর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান স্বামী গোলাপ মিয়া। সময়ের ব্যবধানে দুই পুত্র সন্তানের জননী হন খুশি বেগম।
এরপরও অমানুষিক নির্যাতন করা হয় জাহানারা বেগমের উপর। একপর্যায়ে স্ত্রীর অনুমতি না নিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরে নতুন বউ তোলেন গোলাপ মিয়া। প্রথম স্ত্রী জাহানারা বেগম স্বামী ও সতীনের নির্যাতন সইতে না পেরে বাউরায় বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
এই সুযোগে স্ত্রী জাহানারা বেগমের কাছে তালাক নামা পাঠান গোলাপ মিয়া।
দীর্ঘ দশ বছর পর আজ মঙ্গলবার,১১ অগাস্ট জাহানারা বেগম স্বামীর বাড়িতে ঢুকতে চাইলে বাড়ির খোলানে জাহানারা বেগমকে মারপিট করেন গোলাপ মিয়া , তার দ্বিতীয় স্ত্রী ,মা ও বোন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জাহানারা বেগম মাটিতে বসে কান্না করছেন। এসময় তার দুই সন্তান ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রিদয় হোসেন (১৩) ও ইসলামুল হোসেন (৯)কে মায়ের সাথে মায়ের পাশে থাকতে দেখা যায়। জাহানারা বেগমের দুই সন্তানের কাছে  মারপিটের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, তাদের সামনেই তাদের মাকে মারপিট করা হয়েছে। তোমরা এখানে কেন এসেছো,জানতে দুই সন্তান জানান,তারা মায়ের সাথে বাবার বাড়িতে থাকতে এসেছেন।
মারপিটের বিষয়ে জাহানারা বেগমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,আমি আজ আমার সন্তানদের নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসছিলাম, কিন্তু বাড়ির খোলানে আমার স্বামী, তার নতুন স্ত্রী,তার মা ও বোন আমাকে মারপিট করে। তালাকের বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি তালাকনামা পাইনি।
এ বিষয়ে গোলাপ মিয়ার সাথে কথা বলতে চাইলে  তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। গোলাপ মিয়ার মাকে মারপিটের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মারপিটের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান বজলার রহমান খোকন বলেন, যতদূর জানি,খুশি বেগমকে তালাক দেওয়া হয়েছে। আমি তালাকনামাও দেখেছি,তবে স্ত্রী-তালাকের পর মোহরানা ও সন্তানদের খোরপোষ বাবদ কোন অর্থ পরিশোধ করেননি গোলাপ মিয়া। আমি বিষয়টি নিয়ে আজ মঙ্গলবার,১১ অগাস্ট ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম, কিন্তু কোন সুরাহা করতে পারিনি। মারপিটের বিষয়টি জানি না।